Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৯, ২৮ মার্চ ২০২৫

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের এ সহায়তা রোহিঙ্গা জনগণের জন্য বড় সহায়তা হিসেবে কাজ করবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দাতাদের কাছ থেকে সময়মত অনুদানের মাধ্যমে তারা তহবিলের ঘাটতি পূরণ করেছে, যা খাদ্য সহায়তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে।

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলারের নতুন মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। এ সহায়তা প্যাকেজটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এ সহায়তার ঘোষণা দেয় এবং জানিয়েছে, এটি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) এর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে জানিয়েছেন, এ খাদ্য এবং পুষ্টি সহায়তা প্যাকেজটি দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়ে থাকা জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এটি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে, এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সহায়ক সংস্থার মাধ্যমে এ সহায়তা বিতরণ করা হবে।

বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শরণার্থী শিবির কক্সবাজারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে, যারা মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সহায়ক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হলেও, খাদ্য রেশন এবং অন্যান্য সহায়ক উপকরণের জন্য সহায়তার অভাব অনুভূত হচ্ছে।

এ সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে, খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির সমস্যা মোকাবিলায় উদ্যোগ নেয়া হবে। খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে যাতে রোহিঙ্গারা তাদের প্রাথমিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং তাদের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হয়।

এ নতুন সহায়তা প্যাকেজটির মূল লক্ষ্য হলো শরণার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং তাদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সুরক্ষিত রাখা। এর পাশাপাশি, এ সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জীবনযাত্রার মান উন্নত করারও চেষ্টা করা হবে।

এছাড়া, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (RRRC) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন যে, কক্সবাজারে থাকা শরণার্থীদের জন্য প্রতি মাসে ১২ ডলার এবং ভাসানচরে অবস্থানরতদের জন্য ১৩ ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে, গত বছরও একইভাবে খাদ্য রেশন কমানোর ঘটনা ঘটেছিল, যেটি পরে পুনর্বিবেচনা করে ১২.৫০ ডলারে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) একাধিকবার খাদ্য রেশন কমানোর জন্য সতর্কতা প্রকাশ করেছিলো। সম্প্রতি, জরুরি আর্থিক সহায়তার ঘাটতির কারণে এপ্রিল মাস থেকে খাদ্য রেশন অর্ধেক করার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। ২০২৩ সালের শুরুতেই একই রকম খাদ্য সহায়তার সংকট দেখা গিয়েছিলো এবং সে সময় রেশন জনপ্রতি ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিলো, তবে পরে অপুষ্টির হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তা আবার ১২.৫০ ডলারে ফেরানো হয়েছিলো।

যুক্তরাষ্ট্রের এ নতুন সহায়তা রোহিঙ্গা জনগণের জন্য একটি বড় সহায়তা হিসেবে কাজ করবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দাতাদের কাছ থেকে সময়মত অনুদানের মাধ্যমে তারা তহবিলের ঘাটতি পূরণ করেছে, যা খাদ্য সহায়তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে।

এ সহায়তার পরিমাণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সহায়তার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মানবিক পরিস্থিতি আরও ভালো করা সম্ভব, এবং সহায়তার মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে।

এখনো মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ছাড়া, রোহিঙ্গাদের মানবিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে, পুষ্টির অবস্থার উন্নতি ঘটাতে এবং তাদের জীবনের মান উন্নত করতে যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে।

সবার দেশ/কেএম