গাজা-হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ভাঙচুর-লুটপাটে ‘জড়িত’ ৪৯ জন গ্রেফতার

গাজায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে দেশব্যাপী উত্তাল জনমত রাস্তায় নেমে আসে। তবে এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কিছু দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে ৪৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর। তিনি জানান, গতকাল সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরে জড়িত সন্দেহে মোট ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আইজিপির কঠোর বার্তা
সোমবার রাতেই পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এক জরুরি বিবৃতিতে বলেন, আমাদের কাছে অভিযুক্তদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ইতোমধ্যে শনাক্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অচিরেই তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আইজিপি আরও বলেন, সরকার জনগণের মতপ্রকাশের অধিকারকে শ্রদ্ধা করে এবং আইনসম্মত প্রতিবাদে কোনো ধরনের বাধা দেয়া হয় না। তবে প্রতিবাদের নামে ভাঙচুর, হামলা, লুটপাট কিংবা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনোই বরদাশত করবে না।
পেছনের প্রেক্ষাপট
সোমবার দেশব্যাপী বিশেষ করে সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও ঢাকার কিছু এলাকায় গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। এর মধ্যে সিলেট নগরীর কিছু এলাকায় বিক্ষোভ শেষে একটি অংশ দোকানে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা গেছে—কয়েকটি প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে এবং ভেতরে ঢুকে মালামাল লুট করা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা
পুলিশ জানায়, এসব ঘটনার পর থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্তের কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।
নিরাপত্তা ও প্রতিবাদ—দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা জরুরি
মানবিক ইস্যুতে জনগণের প্রতিবাদ সাংবিধানিক অধিকার হলেও, সেটিকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা অপরাধের সুযোগ গ্রহণ করলে তা নিয়ন্ত্রণ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
একজন বিশ্লেষক বলেন, গাজা নিয়ে দেশের মানুষের আবেগ স্বাভাবিক। কিন্তু সে সুযোগে যদি কোনো উগ্র গোষ্ঠী নাশকতায় নামে, সেটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
সবার দেশ/কেএম