Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ৯ এপ্রিল ২০২৫

হাসিনা-রেহানা-কামাল নাসেরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট

মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট
ছবি: সংগৃহীত

শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘মুজিববর্ষ’ কর্মসূচিতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় ব্যয়, ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট অর্থের ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের মহাপরিচালক জানান, সাত সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি জানুয়ারি মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অনুসন্ধান একটি প্রাথমিক পর্যায়। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নাম থাকলেই দোষী বিবেচনা করা যাবে না। আমরা নিরপেক্ষভাবে প্রতিটি তথ্য যাচাই করছি।

২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মুজিববর্ষ পালনের নামে সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বড় পরিসরে ব্যয় করে। অভিযোগ রয়েছে, ম্যুরাল নির্মাণ, বিদেশ সফর, স্মারক তৈরির নামে অনুৎপাদনশীল খাতে বড় অঙ্কের ব্যয় হয়েছে যার অর্থনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক সমাজ ও বিশ্লেষকরা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশজুড়ে প্রায় ১০ হাজার ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়, যেগুলোর একেকটির নির্মাণব্যয় ৩০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকার মধ্যে। এছাড়া, বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ, সাংস্কৃতিক আয়োজনে অস্বাভাবিক ব্যয়, বিদেশ সফরে ভ্রমণ ভাতা ও সম্মানীর নামে অপচয়ের অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনা ছিলেন মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান। তার বোন রেহানা ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শক বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত। ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষে মূল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।

এত বড় পরিসরে ব্যয় সংক্রান্ত চুক্তি ও অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকার অভিযোগ অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে যদি সত্যিই জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়, তবে তা দেশের জন্য ইতিবাচক। তবে অনুসন্ধান যেনো নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রের বিপুল ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চপর্যায়ের তিন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকের এ অনুসন্ধান বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন প্রক্রিয়ায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সবার দেশ/কেএম