কমিউনিটি দাঁড়ালেই গণতন্ত্র আসে
ভোটে আসে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণী: ফরহাদ মজহার

রাজনীতির অব্যর্থ বর্ণনায় ফের তীব্র ভাষায় সরব হয়েছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, ভোট দিয়ে হয় না, ভোটে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণী আসে। কমিউনিটি দাঁড়ালেই গণতন্ত্র আসে।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী মাজারে জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর আয়োজিত ‘গণমানুষের জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র কায়েম হয়, যখন কমিউনিটি সিদ্ধান্ত নেয়, উন্নয়ন তখনই বাস্তব হয় যখন এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সব চলে। আর এ চেতনা, এ ঐক্যই গণতন্ত্রের ভিত্তি।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকেই সমাজের অংশ বলে উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, সে মুসলমান হোক, হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান— সে আমার সমাজের। মানুষ বড় সত্য। মাজারের সংস্কৃতি সে মানবতাকেই জাগিয়ে তোলে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ মরবে, কিন্তু তার আমল বেঁচে থাকবে। স্মৃতিই শক্তি— এ শিক্ষা দেয় মাজার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের কথা শুনলে আমরা বিধ্বস্ত হয়ে যাই। এ বেদনা জাতিকে পথ দেখায়। ভুলে গেলে আবার আমরা বিপথে যাবো।
ফারুকী অকপটে বলেন, শহীদ পরিবারগুলোর পূনর্বাসনে আমরা শতভাগ সফল হইনি। তবে আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি ছিলো না। এটা আমার মন্ত্রণালয়ের কাজ না হলেও—আমরা নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করি।
ফারুকী জানান, জুলাই জাদুঘর হবে ব্যতিক্রম। এটি হবে এক আবেগঘন যাত্রা। দর্শনার্থী যখন বের হবেন, তিনি হাটতে পারবেন না— পা ভারি হয়ে যাবে। এ জাদুঘর হবে এক ‘বেদনার ভেতর দিয়ে ভ্রমণ’, যার প্রতিটি ইঞ্চিতে থাকবে আন্দোলনের স্মৃতি ও শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মো. নাদিমের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা ও শহীদ মেহেরুন নেছা তানহার বাবা মোশাররফ হোসেন। তারা বলেন, আমাদের সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে এ রাষ্ট্র তৈরি হয়েছে। অথচ আজও বিচার হয়নি, পূনর্বাসন হয়নি। রাষ্ট্র আমাদেরই শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিলো:
- গরিবদের জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্প
- জুলাইয়ের গ্রাফিতি ও সংবাদপত্র প্রদর্শনী
- আন্দোলনের ছবি ও স্মৃতিচারণ
- শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
- ভাবগানের আসর
- বইমেলা
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ রোমেল, উপস্থিত ছিলেন শহীদদের স্বজন, আন্দোলনকারীরা এবং সংস্কৃতিজন।
সবার দেশ/এমকেজে