রাজউকের প্লট কেলেঙ্কারি
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপ-ববিসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রাজউক-এর পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে ৬০ কাঠা জমির অবৈধ বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্য এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনীতিক মিলিয়ে মোট ৫৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার একটি বিশেষ আদালত।
মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব আজ রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ নির্দেশ দেন।
যারা গ্রেফতারি পরোয়ানার আওতায়
- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- তার বোন শেখ রেহানা
- মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক (ব্রিটিশ সাবেক এমপি)
- ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি
- কন্যা আজমিনা সিদ্দিক
এছাড়া, বরাদ্দ অনুমোদন ও কার্যকরে সংশ্লিষ্ট ভূমিকা পালনকারী বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাও গ্রেফতারি পরোয়ানার আওতায় এসেছেন। এর মধ্যে আছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
দুদকের চার্জশিট বলছে কী
দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, পূর্বাচল ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের ৬টি প্লট শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়, যেখানে তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ক্ষমতা’ ও ‘জনসেবা’র আড়ালে স্বজনপ্রীতি এবং দাফতরিক ক্ষমতার নগ্ন অপব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়— এটি ছিল একটি সমন্বিত দুর্নীতির পরিকল্পনা, যেখানে রাজউক কর্মকর্তারা এবং প্রশাসনিক পর্যায়ে অনুমোদনদাতা সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
অভিযোগের আইনি ভিত্তি
গ্রেফতারি পরোয়ানার আওতায় আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
মূল অভিযোগ
অসৎ উদ্দেশ্যে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এ মামলার পটভূমি এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সময়ের। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার বিদেশে অবস্থানের সময়ই এসব মামলা ও চার্জশিট দাখিল হয়। এ প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্নীতির তদন্ত যেমন অপরিহার্য, তেমনই এর সময় ও গন্তব্য দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।
পরবর্তী ধাপ কী
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় এখন ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আসামিরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ না করলে পরবর্তী ধাপে সম্পত্তি জব্দ বা দণ্ডবিধি অনুযায়ী আদালতের এখতিয়ার প্রয়োগ করা হবে।
সবার দেশ/এমকেজে