Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:১২, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ২১:১৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বৈশাখী কনসার্ট, রাতে জমকালো ড্রোন শো

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বৈশাখী কনসার্ট, রাতে জমকালো ড্রোন শো
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের অংশ হিসেবে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চলছে এক জমকালো কনসার্ট। শত শত উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে উৎসবমুখর এ আয়োজনের পাশাপাশি রাতে হয়েছে অভূতপূর্ব ড্রোন শো। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বাস্তবায়ন ও চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহায়তায় এ অনুষ্ঠান বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন মাত্রায় উপস্থাপন করছে।

কনসার্টে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ঝলক

পহেলা বৈশাখের এ দিনে বেলা সাড়ে তিনটায় কনসার্ট শুরু হয় বান্দরবানের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গানের দল ‘বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল’-এর খুদে শিল্পীদের পরিবেশনার মাধ্যমে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী নববর্ষ উৎসব ‘সাংগ্রাই’-এর গান দিয়ে তারা মঞ্চ মাতান। এরপর তারা পরিবেশন করেন ‘মন কী যে চায় বলো, যারে দেখি লাগে ভালো’ গানটি, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

মঞ্চে এরপর উঠে আসে ‘রাফি অ্যান্ড রকারস’ (আর অ্যান্ড আর) ব্যান্ড। তারা ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘সুন্দরী চলেছে একা পথে’র মতো জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়। এরপর কণ্ঠশিল্পী পারসাসহ আরও শিল্পীরা সম্মিলিতভাবে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি পরিবেশন করেন, যা বৈশাখের চেতনাকে আরও জাগ্রত করে।

কনসার্টে অংশ নেন মিঠুন চক্র, জালাল আহমেদ, এফ মাইনর। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)-এর প্রাক্তন প্রধান ও বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এ কনসার্ট ও ড্রোন শোর আয়োজন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া এতে অংশ নেবেন আতিয়া আনিসা, ইসলাম উদ্দিন পালাকার, আরজ আলী ওস্তাদ, সাগর দেওয়ান, পারসা, অ্যাশেস ব্যান্ড ও জাহিদ নিরব।

ড্রোন শো: ইতিহাস ও আশার আলোকচিত্র

অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হয় জমকালো ড্রোন শো। এ শোতে ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাস ও সমসাময়িক ঘটনাবলি প্রতিকৃতির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। আকাশে ড্রোনচিত্র ও রঙিন লেজার রশ্মির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ‘২৪-এর বীর’, পায়রার খাঁচা ভাঙার প্রতীকী থিম, আর ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানানো বার্তা এবং বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের শুভেচ্ছাবার্তা। 

এ ছাড়া জুলাই আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শোতে ভেসে উঠেছে আন্দোলনকারী আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর দৃশ্য, পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধতা এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানানোর বার্তা। প্রযুক্তির মাধ্যমে গণ-আন্দোলন, মানবিক বিপর্যয় এবং ভবিষ্যতের আশার ইঙ্গিত তুলে ধরা হয়েছে এ শোতে।

চীনা দূতাবাসের উপহার

রোববার রাতে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ড্রোন শোর কিছু ছবি শেয়ার করে জানান, এটি চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি উপহার। তিনি লেখেন, ১৪ এপ্রিল, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ড্রোন শো ও লাইভ মিউজিকের এ অসাধারণ প্রদর্শনী দেখার জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই।

জনতার উচ্ছ্বাস

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে কনসার্টে অংশ নিতে ছুটে এসেছেন সব বয়সের মানুষ। বৈশাখের উৎসবমুখর পরিবেশে গান, সংস্কৃতি এবং ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে। দর্শকদের মধ্যে উৎসাহের কোনো কমতি নেই। এ আয়োজন বাংলা নববর্ষকে শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস, সংগ্রাম ও ভবিষ্যতের আশাকে নতুনভাবে তুলে ধরেছে।

সবার দেশ/এমকেজে

সম্পর্কিত বিষয়: