রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
দেড় দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান সচিব পর্যায়ের বৈঠক

দীর্ঘ দেড় দশক পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক আজ (১৭ এপ্রিল)রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বৈঠক দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক পুনরুদ্ধার ও রাজনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। অপরদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমেনা বালুচ এ বৈঠকের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সকালে শুরু হওয়া এ দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে রাজনৈতিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি, প্রতিরক্ষা, কৃষি ও বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে।
শীতল সম্পর্কের পটভূমি
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কে শীতলতা বিরাজ করছিলো। বিশেষ করে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পর সম্পর্ক আরও জটিল হয়। ভিসা প্রক্রিয়ায় কঠোরতা এবং উচ্চ-পর্যায়ের যোগাযোগের অভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি। তবে, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য সহযোগিতা অব্যাহত ছিলো।
সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন গতি
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে এবং ডিসেম্বরে মিসরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক এ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। আজকের বৈঠক এ ধারাবাহিকতার একটি ফলাফল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব ইতোমধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে আলোচনা করেছেন। এ বৈঠক থেকে আমরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইতিবাচক ফলাফল আশা করছি।
সম্ভাব্য ফলাফল
বৈঠক সফল হলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার শিগগিরই ঢাকা সফর করতে পারেন। এছাড়া, বাণিজ্য, কৃষি, এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হতে পারে। এ বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায়ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের এ উদ্যোগকে পর্যবেক্ষকরা একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন। তবে, ঐতিহাসিক সংবেদনশীলতা এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উভয় দেশের নেতৃত্বের ইতিবাচক মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ হবে।
সবার দেশ/কেএম