বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি

বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তদন্ত কার্যক্রমে সহায়ক তথ্য সংগ্রহের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
কমিশন ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, এবং জড়িত ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থা বা সংগঠন চিহ্নিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
তথ্য প্রদানের পদ্ধতি
কমিশন নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সাক্ষ্য আহ্বান করেছে। তথ্য প্রদানের পদ্ধতি নিম্নরূপ:
- ওয়েবসাইট: bdr-commission.org
- ই-মেইল: [email protected]
- সশরীরে উপস্থিতি: বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম), নতুন ভবন (৭ম তলা), ড. কুদরত-এ-খুদা সড়ক, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫
- কুরিয়ার/ডাকযোগ: উপরোক্ত ঠিকানায়
- হটলাইন: ০১৭৬৯-৬০০২৮১ (সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা)
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তথ্যদাতার পরিচয়ের গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে। তথ্যদাতাকে নাম, ফোন, ই-মেইল, ঠিকানা ও তথ্যের প্রকৃতি (যেমন: শহীদ পরিবারের বিবৃতি, সাক্ষীর বিবৃতি, মিডিয়া সামগ্রী, মোবাইল রেকর্ড, হোয়াটসঅ্যাপ ডেটা) ওয়েবসাইটে সাবমিট করতে হবে।
কমিশনের কার্যপরিধি
কমিশনের কার্যপরিধি নিম্নরূপ:
- পিলখানায় সংঘটিত ঘটনার প্রকৃতি ও স্বরূপ উদঘাটন।
- হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধের সংঘটনকারী, সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, আলামত ধ্বংসকারী, ইন্ধনদাতা এবং দেশি-বিদেশি অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ।
- হত্যাকাণ্ডের সময় ও আগে-পরে সংঘটিত অপরাধ এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিতকারীদের চিহ্নিতকরণ।
- অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের চিহ্নিতকরণ।
- মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধ অক্ষুণ্ন রেখে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া প্রকৃত অপরাধীদের তদন্তে অন্তর্ভুক্তকরণ।
- দেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ।
তদন্তের অগ্রগতি
কমিশন ইতোমধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে এবং শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে সাক্ষ্য দিতে তলব করেছে। কিছু বিদেশি দূতাবাসের সাথে যোগাযোগের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কমিশন স্বাধীনভাবে এবং কোনো চাপ ছাড়াই কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন জুন ২০২৫-এর মধ্যে চূড়ান্ত করার প্রত্যাশা রয়েছে।
পটভূমি
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন, এবং ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রয়েছে, যা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায়। বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান।
কমিশন সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে যাতে এই নৃশংস ঘটনার পূর্ণ সত্য উদঘাটিত হয়।
সবার দেশ/কেএম