আর্থিক অনিয়ম: এশিয়াটিকের ১৭ প্রতিষ্ঠান জব্দ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) কর ফাঁকি, আর্থিক অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এশিয়াটিক গ্রুপের ৮ পরিচালক এবং ১৭টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসব হিসাবের লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
জব্দকৃত হিসাবের পরিচালকদের তালিকা:
- আসাদুজ্জামান নূর (আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী)
- সারা যাকের (প্রয়াত আলী যাকেরের স্ত্রী)
- ইরেশ যাকের ও শ্রেয়া সর্বজয়া (আলী যাকেরের সন্তান)
- ইকরাম মাঈন চৌধুরী
- মো. মোরশেদ আলম
- মোহাম্মদ হাসান ফারুক
- মো. রেজাউল হাসান
এশিয়াটিক গ্রুপ দাবি করেছে, আসাদুজ্জামান নূর ২০২৪ সালের আগস্টে শেয়ার বিক্রি করে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে গেছেন, তবে এর নির্দিষ্ট তারিখ বা প্রমাণ তারা প্রকাশ করেনি।
জব্দকৃত প্রতিষ্ঠানের তালিকা:
- এশিয়াটিক মিডিয়া লিমিটেড
- এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশন লিমিটেড
- এশিয়াটিক টকিং পয়েন্ট কমিউনিকেশনস লিমিটেড
- এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং
- অপটিমাম সার্ভিস লিমিটেড
- এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং
- মিডিয়া কমিউনিকেশন্স লিমিটেড
- ফোরথট পিআর লিমিটেড
- এশিয়াটিক মাইন্ড শেয়ার
- এশিয়াটিক টিএমএস
- ব্ল্যাকবোর্ড স্ট্র্যাটেজিজ
- আউট অব দ্য ব্লু-ডিজাইন স্টুডিও
- ধ্বনি চিত্র
- স্টেনসিল বাংলাদেশ
- রেডিও স্বাধীন
- ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভারটাইজিং
- এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং (পুনরায় তালিকাভুক্ত)
অভিযোগের ভিত্তি:
একজন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিআইসি তদন্ত শুরু করে। অভিযোগে বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবহার করে কর ফাঁকি, আর্থিক অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করেছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের মধ্যে রয়েছে:
- ২০০৯-২০১৪ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে ভারতীয় সেনা ও তাদের পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত স্বর্ণ ও অর্থ আত্মসাৎ।
- মুজিব শতবর্ষ, ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফর, জয়বাংলা কনসার্ট ও ‘মুজিব’ সিনেমার প্রচারে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ।
সিআইসির পদক্ষেপ:
সিআইসির মতে, অভিযুক্তরা সম্পদের তথ্য গোপন করে আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর রোধে আয়কর আইন ২০২৩-এর ২২৩(২) ধারা অনুযায়ী জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং ভবিষ্যতে ফৌজদারি মামলা বা অর্থদণ্ডের মতো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
সবার দেশ/কেএম