খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরছেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন। তার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল ২০২৫) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে দেশে ফেরানোর জন্য সাহায্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওটা নিয়ে কাজ চলছে। তবে, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার নির্দিষ্ট তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, খালেদা জিয়া এপ্রিলের মধ্যেই দুই পুত্রবধূ—জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরতে পারেন। কেউ কেউ দাবি করেছেন, তিনি আগামী বুধবার (৩০ এপ্রিল) ফিরতে পারেন। তবে, সবকিছুই নির্ভর করবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তি ও এর সিডিউলের ওপর।
বর্তমানে খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করছেন। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ একাধিক রোগে ভুগছেন।
খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি হন। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় পরিবারের আবেদনে সরকার তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি সম্পূর্ণ মুক্তি পান। তার বিরুদ্ধে থাকা দুটি দুর্নীতির মামলার রায়ও বাতিল করা হয়।
চিকিৎসার জন্য ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি তাকে বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে নেয়া হয়। ১৭ দিন হাসপাতালে চিকিৎসার পর ২৫ জানুয়ারি তিনি তারেক রহমানের বাসায় স্থানান্তরিত হন। এবারের ঈদুল ফিতর তিনি পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে উদযাপন করেন, যা তার জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে, কারণ কারাবন্দি অবস্থায় তার চারটি ঈদ কারাগার ও হাসপাতালে কেটেছিলো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে খালেদা জিয়ার পরিবারের যোগাযোগের ভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর আগে ২০২৪ সালে তাকে লন্ডনে নেয়ার সময়ও বিশেষায়িত লং ডিসটেন্স এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হয়েছিলো, যাতে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থাও ছিলো। এবারও তার স্বাস্থ্যের জটিলতার কারণে একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম