বিএনপি-জামায়াতের নেই কোনও কর্মসূচি, সমালোচনার ঝড়
আজ ৫ জানুয়ারির ‘হাসিনা’ হওয়ার নির্বাচন
আজ কলঙ্কিত ৫ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের এ দিনে ভোট এবং ভোটারবিহীন আমি-ডামি নির্বাচনের আয়োজন করে ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায় রচনা করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। যে নির্বাচনে হাসিনা আরও ‘হাসিনা’ হয়ে ওঠে। ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করা সে নির্বাচন নিয়ে আজ কোনো কর্মসূচি না দেয়ায় বিএনপি-জামায়াত সহ বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সচেতন মহলে।
সেদিন নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছিল। ১৫৪টা আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে জাতির সঙ্গে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা তামাশা করেন। একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মত প্রকাশের অধিকার, ভোটের অধিকার স্থায়ীভাবে কেড়ে নেয়া হয়।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে কলঙ্কিত সে নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে কোনও ভোট হয়নি। বাকি আসনগুলোতে যে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে ৯৫ ভাগ ভোটার ভোট দিতে যাননি। ৫ জানুয়ারির পরে দেশে কোনও নির্বাচনই আর সুষ্ঠু হয়নি। ২০১৮ সালে রাতের বেলায় ভোট এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে আমি-ডামি নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুঁকে দেয় ভারতের সেবাদাস হাসিনা।
২০১৪ সালের ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে সেসময় যে সকল গণমাধ্যম সাহসী ভূমিকা রাখে,সেসবের মধ্যে দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধের চেতনার জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাব অন্যতম। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ভোটের পরের দিন ‘নীরব প্রত্যাখ্যান’ শিরোনামে এক সাহসী প্রতিবেদন প্রকাশ করে পত্রিকাটি। যা রাজনিতক ও পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
এমনকি তৎকালীন প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এক মহাসমাবেশে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা দেখিয়ে ভোটারবিহীন সে নির্বাচনের প্রতিবাদ জানান।
ইতোমধ্যে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে রক্তচোষা হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া ৫ মাস পেরিয়েছে। আওয়ামী লীগের অসহনীয় গুমখুন, লুটপাট ও দুর্নীতিতে ভরা দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনে শত শত নেতাকর্মীকে হারিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত।
সমালোচকরা বলছেন, সবচেয়ে নিপীড়নের শিকার এ দুই দল এখন কার্যত আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর ভুলতে বসেছে গণতন্ত্রের ইতিহাসের সে কলঙ্কজনক দিনের কথা। দুই দলই এখন ফ্যাসিবাসী আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভুতি প্রদর্শন ও তাদের শেল্টার দেয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। এসব ঘটনায় তারা উদ্বেগ জানিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। এমনকি তারা ৫ আগষ্টের আগের ২৬ দিন ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে তান্ডবলীলা চালিয়েছে, সেসবও ভুলতে বসেছে বিএনপি-জামায়াত। ক্ষেত্র বিশেষে তারা পলাতক হাসিনার সহযোগীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিডযোগও উঠেছে কোথাও কোথাও।
বিএনপি-জামায়াত সহ দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে নেটিজেনরা বলছেন, ৫ জানুয়ারি ভুলে গেলে ইতিহাস ভুলবে না! এরা কিছুই মনে রাখেনা। শুধু কে কার আগে ক্ষমতায় যাবে ওটা নিয়েই থাকে। এজন্যই এদের জন্য শেখ হাসিনা আসে। মনে হচ্ছে যেন এখনই তারা ক্ষমতার মসনদ পেয়ে গেছে, পিছনের কথা ভুলেই বসেছে।
আমার দেশের সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান রোববার নিজের ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ৫ জানুয়ারির কথা কি ভুলে গেছে জাতি! আজকে কোন কর্মসূচি চোখে পড়ছে না ৫ জানুয়ারি নিয়ে। এ দিনই কিন্তু একটা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল শেখ হাসিনা। ১৫২ সীটে আগেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরকম তামাশা দুনিয়ার কোন দেশে হয় নি!
তার এ পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অনেকেই তার পোস্টটি শেয়ার করেছেন। পোস্টের নিচে এনিয়ে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এছাড়া অনেকেই ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচন নিয়ে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
মো: পিয়াস লিখেছেন, খুনি হাসিনার সকল অপকর্ম বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভূলবেনা। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের আই-কিউ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমরা ভুলে যায়।পরস্পর কাঁদা ছোঁড়াছুড়িতে ব্যস্ত, এসব বিষয় ভাবার সময় আছে!
আহমেদ ইবনে সাইফুল্লাহ লিখেছেন, এইটা কেউ মনে রাখে নাই, না বিএনপি না জামায়াত। সবার পোস্ট ঘাটলে একে অপরের পু.. ছাড়া কোনো পোস্ট পাবেন না।
আহমেদ রাইয়ান তামিম লিখেছেন, বিএনপি অন্তত একটা কিছু বলা উচিত ছিল। কিন্তু এরা এখন আছে কিভাবে ক্ষমতায় যাবে এটা নিয়ে ব্যস্ত।
সবার দেশ/এওয়াই