Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ২৩:০২, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১১:১৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দেশকে প্রদেশে বিভক্তিকরণ, অর্থনৈতিক ভাবনা

দেশকে প্রদেশে বিভক্তিকরণ, অর্থনৈতিক ভাবনা
ছবি: সবার দেশ

কোন প্রকার রাষ্ট্রীয় খরচ না বাড়িয়ে বর্তমান বিভাগগুলোকে প্রদেশে রূপান্তরিত করলে সমস্যা নেই। প্রদেশের নামে দফতর অধিদফতর এবং বিভিন্ন রকমের পথ পদবী তৈরি করে রাষ্ট্রীয় খরচ বাড়ানো উচিত হবে না। একটি সমীক্ষা করে দেখা দরকার, কোনটি উত্তম। আর তা না হলে বিভাগীয় কমিশনারদেরই প্রদেশের দায়িত্ব অর্পণ করে একই খরচে প্রদেশ চালনা করা যেতে পারে।

রাষ্ট্রের ব্যয়বৃদ্ধি মানেই জনগণের ওপর করের  বোঝা বেড়ে যাওয়া। জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়ানোর পূর্বে রাষ্ট্রীয় সম্পদের সর্বোচ্চ এবং সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা তৈরি করা উচিত। বিভিন্ন খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে রাষ্ট্রের আয় বৃদ্ধির ধারাবাহিক অবস্থা বিদ্যমান রাখতে হবে। 

প্রদেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাকে কেন্দ্র থেকে এ নির্দেশ দিয়ে দিতে হবে যাতে প্রদেশের ভেতরেই রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রাদেশিক খরচের ব্যবস্থা করে উদ্বৃত্ত অর্জনকে কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা করা। এর জন্য একটি দায়বদ্ধতা তৈরি করে নিয়ম করে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থের সাশ্রয় হবে এরং কেন্দ্রের আয় বৃদ্ধি পাবে। 

বিগত দশকের পর দশক আমরা দেখে আসছি, রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা কর্মচারীরা রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঠিকই নেন, কাজের কাজ কিছুই হয় না। সাধারণ জনতার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। দেশ দিনকে দিন বেগবান গতিতে ক্রমাবনতির দিকে ধাবিত হয়। বছর বছর জনতার ওপর করের বোঝা শুধু বাড়তেই থাকে। 

এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তারাও উন্নয়নের মূলা ঝুলিয়ে রাষ্ট্রের সম্পদ নিজের করে নিতে ব্যস্ত থাকেন। অর্জিত সম্পদ বিদেশে পাচার করে বেগম পাড়ায় বা এজাতীয় জায়গায় বিভিন্ন দেশের দ্বিতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। 

আবার কেন্দ্র থেকে এরকম নির্দেশনাও প্রত্যেকটি জেলায় দেয়া যেতে পারে, প্রতি জেলার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং রাষ্ট্র দ্বারা নির্মিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আয়মুলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ওই জেলার নিজস্ব বাৎসরিক খরচ নির্বাহের ব্যবস্থা করতে হবে।

যদি প্রতি জেলার বাৎসরিক খরচ নির্বাহের পর উদ্বৃত্ত কোন টাকা থাকে তা কেন্দ্রে জমা দিবে, আর যদি কোন জেলায় আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হয় তাহলে মাত্রা বেঁধে দিয়ে তা কেন্দ্র থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে। 

আরও পড়ুন<<>> ‘শয়তানের খোঁজে অস্ত্রোপচার’

তাহলে জেলার কর্ণধার ব্যক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং তার অধিনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। তারা অনৈতিক কোন কাজ নিজেরা করতে যাবেন না এবং বিলাসী হয়ে রাষ্ট্রকে দিনকে দিন অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেবেন না। 

পরিশেষে বলা যায়, এ ধরনের  সুন্দর সুন্দর চিন্তাগুলো করার জন্য একজন সত্যিকারের চিন্তাশীল, দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কের প্রয়োজন। যার নৈতিক চরিত্র হবে অত্যন্ত উন্নত এবং তিনি সকল কিছুর ঊর্ধ্বে ওঠে শুধু রাষ্ট্রের কল্যাণের চিন্তাই করবেন । প্রয়োজনে তিনি নিজের আপন জনকে পর্যন্ত কোন স্বজনপ্রীতি প্রদর্শন করবেন না। তার চিন্তা চেতনায় ধ্যান ধারণায় সবসময় বিরাজ করবে শুধু কিভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন করা যায়।

রাষ্ট্রের কর্ণধারকে সবসময়ই চিন্তা করতে হবে একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থার কথা । অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করতে না পারলে সে রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন করা যাবে না। 

তাই রাষ্ট্রকে কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত করা হোক আর জেলায় রাখা হোক, তা কোন বড় ব্যাপার নয়। ব্যাপার হলো, রাষ্ট্রের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে জনতা কে শান্তিতে, সুখে, স্বস্তিতে রাখার জন্য একটি সুন্দর অর্থনৈতিক প্রবাহ চালু করতে হবে। সেজন্য যদি প্রয়োজন হয় খরচকে নিয়ন্ত্রণে রেখে রাষ্ট্রকে বিভিন্ন দফতর, অধিদফতর, জেলা, বিভাগ এমনকি কয়েকটি প্রদেশেও ভাগ করা যেতে পারে। কিন্তু প্রদেশে ভাগ করার নামে কোন মতেই রাষ্ট্রের খরচের বৃদ্ধি করা যাবে না। করলে তা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়: