Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১৯:২০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফ্যাসিস্ট সৃষ্টিকরণে তোষাগার তোষামোদকারীর পুরস্কার হতে পারে না!

ফ্যাসিস্ট সৃষ্টিকরণে তোষাগার তোষামোদকারীর পুরস্কার হতে পারে না!
ছবি: সবার দেশ

সরকার প্রধানকে তৈল মর্দনের পুরস্কার স্বরূপ  রাজউকের ‘ঝিলমিল’ প্রজেক্টে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিল্পী সাহিত্যিক, আইনজীবী, সরকারি চাকরিজীবী, প্রবাসী সাংবাদিক, গৃহিণী, সমাজসেবক এবং ব্যবসায়ীরা।

কি অদ্ভুত মানসিকতা সমাজের উচ্চ শিক্ষিত ও  গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের! ছি! তাদের জন্য একরাশ ছি!!
দেশের সম্পদ এবং জনগণের করের টাকায় উন্নয়ন করা প্রকল্পে বর্তমানে ফেরারী, স্বৈরাচারী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর কিছু ড্রাইভার এবং পিয়নকেও ওখানে প্লট বরাদ্দ দিতে কার্পণ্য করেননি। তাই আমরা বলতে পারি, অন্তত তিনি ছোট বড়, লোকভেদ বা বৈষম্য করেননি, কিছু নিন্ম আয়ের লোকদেরও যৌথভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছিলেন। কেউ পেয়েছেন তিন কাঠা কেউবা পাঁচ কাঠা আয়তনের প্লট।

রাজউকের প্লট দুভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। ১. লটারির মাধ্যমে এবং ২. সংরক্ষিত রাজউক ধারা ১৩/এ, অনুযায়ী। এ ধারায় অসামান্য অবদানের জন্য প্লট বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিলো।

প্লট বরাদ্দের সংখ্যা ২০৬, সংরক্ষিত কোটায় এ প্লটগুলো দেয়া হয়েছিল তৈলবাজিতে অসামান্য অবদানের জন্য । প্রশ্ন হলো, এ অসামান্য অবদান রেখে কারা কারা জাতিকে কলঙ্কিত করেছেন। তা ইতোমধ্যেই পত্রিকা মারফত আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু অবদানগুলো কি?

না প্লট গ্রহীতা ওই সকল মহান ব্যক্তিদের তথাকথিত অবদানে জাতির কোন কল্যাণ হয়নি বরং অকল্যাণ হয়েছে। অন্য লোকদের ভাগ্যবিরম্বনার কারণে দুষ্ট হয়েছে। যোগ্য লোকদেরকে বঞ্চিত করেছে, দোসর হয়ে স্বৈরাচারীর ক্ষমতা আরো বেশি বৃদ্ধি করেছে। তোষামোদী, চাটুকারিতার মাধ্যমে কুকর্মে স্বৈরাচারের কুকর্মে সহযোগিতা করেছে, এ হচ্ছে তাদের অসামান্য অবদান।

এরকম তথাকথিত অবদানের মাধ্যমে তারা শুধু নিজেদের মর্যাদাহানিই করেননি, জাতিকেও করেছেন কলঙ্কিত। তাই ৫ আগস্টের পর তাদের মধ্যে অনেকেই পালিয়ে গেছেন এবং যারা দেশে আছেন তারাও গা ঢাকা দিয়ে আছেন।

আরও পড়ুন<<>> ‘লাউ-কদু’ আর ‘বিপ্লবী’ সরকারের পার্থক্য থাকা উচিত

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একজন বিচারপতিকে প্রধান করে এ বিষয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছেন তদন্ত সাপেক্ষে ঐ সকল ব্যক্তিদেরকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য, যদিও এ কমিটি এখনও কাজ শুরু করতে পারেননি।

এ সকল দুষ্কর্ম বা খয়ের খাঁগীরি চিরতরে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে জাতির প্রত্যাশা খুব দ্রুত এ কমিটিকে কার্যকরী ভূমিকা রাখার ব্যবস্থা করে দিয়ে অচিরেই সঠিক তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করা। তাতে জাতি যেমন কলঙ্কমুক্ত হবে, তেমনি ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করতে দ্বিতীয় কেউ সাহস পাবে না। 

৭১ এ স্বাধীনতার পরেও সদ্য ভূমিষ্ঠ বাংলাদেশ রাষ্ট্রে এরকম চাটুকারি একটি শ্রেণি তৈরি হয়েছিলো। যাদের চাটুকারিতা ও তোষামোদির মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো যে, বাংলাদেশের প্রথম সরকারকেও   জনতার রোষানলে পড়ে অবশেষে করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছিলো ১৯৭৫ সালে। 

যে ধারা বাংলাদেশের প্রথম সরকার থেকে আরম্ভ করে আজ অবধি অব্যাহত আছে। সে বাজে ধারা রোধকল্পে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে নতুন করে এ ধরনের সাহস যেন কেউ না করে সেরকম একটা শক্ত টেকসই ব্যবস্থা করা।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়: