Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১১:১৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ব্যক্তি স্বার্থে উপেক্ষিত জনস্বার্থ, মুক্তিতে করণীয় 

ব্যক্তি স্বার্থে উপেক্ষিত জনস্বার্থ, মুক্তিতে করণীয় 
ছবি: সবার দেশ

ঢাকা শহরের রাস্তায় আপনি যখন চলাচল করেন কখনো কি আপনি এমনটি দেখতে পেয়েছেন যে, পথের পাশে রাস্তা কাটাকাটি চলছে। আমি নিশ্চিত আপনার উত্তর হবে হ্যাঁ। হয়তো সেরকম কিছু কাজ এখনও চলছে আপনার এলাকাতে। 

গত ৫০ বছর অভিজ্ঞতায় বলা যায় যে আমি যে রাস্তায় সবসময় চলাচল করি, সে রাস্তায় কমপক্ষে ৫০ বার কাটাকাটি হতে দেখেছি। হ্যাঁ অবশ্যই এখনও চলছে কাটাকাটি। 

আমাদের দেশে প্রকৌশলীদের অভাব নেই, বহু বড় বড় ডিগ্রিধারী প্রকৌশলী বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বিভাগে কর্মরত আছেন। রাস্তার খোঁড়াখুঁড়িতে সিটি কর্পোরেশন এরিয়ার জনগণের যতই ভোগান্তি হোক, ভাব দেখে মনে হয় তাতে তাদের কিছু আসে যায় না।

জনগণকে স্বস্তি দেয়ার ভাবনাই যদি তাদের থাকতো, তাহলে কি বছর জুড়ে এরকম খোঁড়াখুরির কাজ চলে?
আসলে ব্যাপার তা না, ব্যাপার হলো উন্নয়ন বা মেরামতের কাজ যদি নাই চলে, তাহলে তাদের বাড়তি উপার্জন তো বন্ধ হয়ে যাবে। সে জন্যই তারা এ সমস্যাগুলোকে জিইয়ে রাখে। নতুন কাজ নতুন ভাবে টাকা আসার ব্যবস্থা, এ হলো আমাদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিত্য কাজ কর্ম।

সিটি কর্পোরেশনে ইউটিলিটি ডাক্ট ড্রেন

সমস্যার কথা যখন উল্লেখ করলাম তাহলে সমাধানের কথাও উল্লেখ করা উচিত। করণীয়:
মডেল হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট আয়তন বিশিষ্ট পৌরসভা কে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নেয়া যেতে পারে। পৌরসভা এলাকার রাস্তার পাশ দিয়ে ফুটপাতের পাশে ইউটিলিটি ডাক্ট নির্মাণ করে অতি সহজেই ভোগান্তি থেকে জাতিকে নিস্তার দেয়া যেতে পারে। রাস্তার লাইট, পানি, গ্যাস লাইন, পয়-নিষ্কাশন ব্যবস্থা এ নাগরিক সেবাগুলো সুষ্ঠু পরিকল্পনা মাফিক নির্মাণ করলে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করে বছর বছর রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের অপচয় রোধ করা যাবে। 

শুধু দরকার সুন্দর ব্যবস্থাপনা এবং শৃঙ্খলা সহকারে  নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষন করা। গতানুগতিক ব্যবস্থায় স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী বাহিনীকে তুষ্ট করার জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজগুলো তাদের কাছে কন্টাক্ট হিসাবে দেয়া হয়। 

আরও পড়ুন<<>> ফ্যাসিস্ট সৃষ্টিকরণে তোষাগার তোষামোদকারীর পুরস্কার হতে পারে না!

এ অবস্থা বিগত দিনে বাংলাদেশ সরকারে যারা পরিচালিত করেছেন সে সকল দল-বিএনপি আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি সবাই করেছে। তা না করলে তাদের স্থানীয় কর্মী বাহিনীকে উজ্জীবিত রাখা যায় না। স্থানীয় মাস্তানদেরকে সরাসরি টাকা পয়সা সরবরাহ করে একটা উসিলা ধরে তাদের টাকা উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়া আর কি! 

আবার সিটি কর্পোরেশনে যে আমলাতন্ত্র থাকে তারাও নিরুপায় থাকেন রাজনীতি নেতৃবৃন্দের চাপের কাছে।  সে কারণে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ তাদের সাথে এক জোট বেঁধে অসৎ পন্থা অবলম্বন করে নিজেদের পকেট ভারি করতে ব্যস্ত থাকেন। এ সমস্ত বহুমুখী তন্ত্র-মন্ত্র, বেহাল ব্যবস্থাপনা এবং ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থের জন্য জনগণের স্বার্থ সব সময়ই উপেক্ষিত হয়ে এসেছে। 

এখন সে বাস্তবতা বদল হয়েছে, সরকারে আছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা ছাত্র-জনতার রক্ত এবং অনেক পঙ্গুত্ব ও বিকলাঙ্গতার বিনিময়ে এসেছে । অতএব তাদের কাছে সেরকম কোন বাহানা নেই, তাই এখনই সময় রাষ্ট্রকে সঠিক লাইনে নিয়ে আসার। আশা করি বর্তমান সরকার এ ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে সত্যিকারের জনবান্ধব আমলাতন্ত্র এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নৈতিকতার মাধ্যমে পরিচালিত করে জনতার স্বস্তির কারণ ঘটাবেন।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।
 

সম্পর্কিত বিষয়: