সুস্থ বিবেচনা প্রয়োগেই মিলে বিরম্বনা থেকে মুক্তি

নেট জগতে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টের বাকবিতন্ডার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। তারা দুজনেই সরকারের দশম গ্রেড বা ২য় শ্রেণী পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
এক মোটরসাইকেল আরোহী উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসাতে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট তাকে আটকান এবং ১ হাজার টাকা ফাইন করে। অন্যান্য পথচারীর সাথে সেনাবাহিনীর এক সার্জেন্ট সাদা পোশাকে একই পথে যাচ্ছিলেন। তিনি এ ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন এবং কর্তব্যরত সার্জেন্টকে অনুরোধ করেন ছেড়ে দেয়ার জন্য। তার যুক্তি হলো, বিদেশে অনেক জায়গায় আমরা দেখে থাকি কর্তব্যরত সার্জেন্টরা রাস্তায় যাতে জ্যাম না হয় সেই চেষ্টাই করে থাকেন সর্বদা । মোটরসাইকেল চালকের তেমন কোন দোষ ছিলো না এবং রাস্তায়ও তেমন কোন জ্যাম ছিলো না।
কিন্তু আমাদের দেশে তার বিপরীতটাই ঘটে, বরং সার্জেন্ট সাহেবেরা বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেল এমনকি অন্যান্য গাড়ি আটকিয়ে নতুন করে জ্যামের সৃষ্টি করেন। এতে জনতার যে ভোগান্তির কারণ হয়, সে বিষয়ে তারা বেশিরভাগ সময় নির্লিপ্ত থাকেন।
আরও পড়ুন<<>> ব্যক্তি স্বার্থে উপেক্ষিত জনস্বার্থ, মুক্তিতে করণীয়
এক কথা দুই কথা এমনি করে তাদের উভয়ের মধ্যে তর্ক বিতর্ক লেগে যায়, সেখানে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। ট্রাফিক সার্জেন্ট সাদা পোশাকধারী ভদ্রলোকের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি পরিচয় দেন যে, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সার্জেন্ট। এ কথা শুনে ট্রাফিক সার্জেন্ট ফোন লাগান সেনাবাহিনীর এক মেজর যিনি তার বন্ধু হন। বন্ধুর কাছে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট সম্বন্ধে অভিযোগ করেন এবং মোবাইলটি সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট কে ধরিয়ে দেন কথা বলার জন্য।
ওপার থেকে মেজর সাহেব জানতে চান ঘটনা কি? সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট নিজের পরিচয় দিয়ে মেজর স্যারকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, স্যার মোটরসাইকেল আরোহীর তেমন কোন দোষ নেই। তাছাড়া রাস্তা ফাঁকা থাকাতে উনি একটু উল্টো পথে রাস্তা পার হচ্ছিলেন, সেজন্য ট্রাফিক সার্জেন্ট ওনাকে ধরে ফাইন করছেন। ব্যাপারটি এভাবে না করে উনি তাকে সাময়িক সাবধান করে দিয়ে ছেড়ে দিতে পারতেন, এ আর কি।
এখন প্রশ্ন হলো, এ যে বাদানুবাদতা, হট্টগোল, জনগণের ভোগান্তি, এগুলো কিন্তু এক নিমিষেই শেষ করা যেতো নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে বিচার করলে এবং তা ট্রাফিক সার্জেন্টের দ্বারাই সম্ভব ছিলো।
উপসংহারে সবার কাছে আবেদন রাখা যায়- আসুন, আমরা যে যার জায়গা থেকে সুস্থ বিবেক সম্পন্ন হয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ করি এবং জাতিকে সেবা দিয়ে যাই এবং অহেতুক বিরম্বনা এড়িয়ে চলি। তাতে জাতি উপকৃত হবে, আমাদের পদের ভাবমূর্তি বাড়বে এবং জনগণ শান্তি পাবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক:
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।