Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১২:০৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১২:২৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ, রাজনীতিবিদদের নিকট জনতার প্রত্যাশা

নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ, রাজনীতিবিদদের নিকট জনতার প্রত্যাশা
ছবি: সবার দেশ

যে দেশে দোষ করেও পদত্যাগ করে না কেউ, সে দেশে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নজির স্থাপন করলেন। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। ফেসবুকে তিনি তার সম্পদের হিসাব বিবরণীও জনতার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেছেন। 

সদ্য সাবেক উপদেষ্টা নাহিদের এটি খুবই ভালো একটি বিষয় আমাদের সবার জন্য। তিনি এও বলেছেন যে, তথ্য অধিকার আইনে বাংলাদেশের সরকারি দফতর থেকে তার বিবরণীর হিসাব যে কেউ দেখতেও পারবেন।

তিনি তার একান্ত সচিবের ব্যাংকের হিসাব বিবরণীও  দিয়েছেন উপরন্তু এও বলেছেন উপদেষ্টা হবার সময় এবং পরে তারা দু’জনেই কোথাও কোন জায়গা জমি ক্রয় করেননি। 

তিনি যা করেছেন তা সত্যি সত্যি আবার সাধারণ জনতাকে জানিয়েও দিয়েছেন। এখন আগ্রহী সাধারণ জনতার মধ্যে কেউ যদি চায় তা জানতেও পারবে। যদিও অচিরেই আমরা দেখতে পাবো যে, কিছু হলদে বা অপেশাদার সাংবাদিক এ বিষয়ে ঋণাত্মক, আজগুবি সংবাদ প্রচার করে তার ইজ্জতের হানি ঘটাতে নিষ্ফল চেষ্টা করবে। 

আরও পড়ুন<<>> সুস্থ বিবেচনা প্রয়োগেই মিলে বিরম্বনা থেকে মুক্তি

অতীতের দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাই, অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটেছে। কিন্তু সত্যকে তো আর লুকানো যায় না, দিনশেষে বা কোন এক সময় সত্য অবশ্যই সত্য হিসাবেই উদ্ভাসিত হয়। 

সদ্য সাবেক উপদেষ্টার এ কাজ একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে বর্তমান এবং আগামী দিনের রাজনীতিবিদদের জন্য । ভবিষ্যতে যারাই ক্ষমতায় থাকবেন বা যাবেন তারা এ যথাযথ উদাহরণটি অনুসরণ করতে পারেন। এটা করা উচিত। তাহলে নিশ্চয়ই তারা জনতার যথাযথ সম্মান, শ্রদ্ধা এবং সাধুবাদ পাবেন।

প্রসঙ্গক্রমে একটু আলোকপাত করতে হয়, বিগত দিনের ছাত্রনেতাদের মধ্যে এমন অনেককেই আমরা দেখেছি, এক সময় যাদের পকেটে দু‘টি টাকা থাকতো না, এমনকি অপরের কাছ থেকে ধার করে ধূমপান করতেন। সেরকম অনেক ছাত্রনেতারাও রাজনীতি করে কোটিপতি হয়েছেন, যারা এখনও এ দেশেই বহাল তবিয়তে রাজনীতি করে যাচ্ছেন, যা আমাদের সকলেরই জানা আছে। অসৎ উপায়ে টাকা কামানোর নেশাই আমাদের রাজনীতিকে কলুষিত করে দিয়েছে, যার প্রভাব সারা দেশের আপামর জনসাধারণের ওপর পড়ে।

আমাদের বিগত দিনের পঁচা, ঘৃণিত রাজনীতি আমার আজকের আলোচ্য বিষয় নয়। আমি যা বলতে চাচ্ছি সেটা হলো, এমনিভাবে যদি সামনের দিকে আমাদের রাজনীতি চলমান থাকে, তাহলে আমি নিশ্চিত আমাদের বাংলাদেশে পজিটিভ পরিবর্তন অবশ্যই আসবে ইনশাআল্লাহ। 

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আদেশ দেয়া হয়েছিলো সকল সরকারি কর্মচারীদের তাদের সম্পদ বিবরণীর হিসাব দেয়ার জন্য। দুই এক দফা সময়ও বৃদ্ধি করা হয়েছিলো। যতদূর মনে পড়ে এ মাসের ১৫ তারিখ মানে ফেব্রুয়ারি ১৫ তারিখ ছিলো সর্বশেষ সময়। সে বিবরণীর কি হলো জানতে ইচ্ছে করে। সত্যি সত্যি আলোর মুখ দেখলে তো অনেকেরই মুখ কালো হয়ে যাবে এবং থলের বিড়াল বের হয়ে গিয়ে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়ে যাবে। তখন ওই সমস্ত কর্মচারী কর্মকর্তাদের অবস্থা কি হবে। সে জন্যই কি প্রকাশে এরকম কালক্ষেপণ হচ্ছে? এর একটি পরিষ্কার চিত্র অচিরেই জনতার মাঝে প্রকাশিত হবে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ আমাদের ন্যায্য দাবি। 

এমন একটি মাত্র ইস্যু নিয়ে ভালোভাবে করে কাজ করে সফলতা লাভ করতে পারলে তা আমাদের সবার আদর্শ চরিত্র গঠনের জন্য একটি উত্তম মডেল কাজ হিসেবে পরিগণিত হবে। আমাদের আগামী প্রজন্ম সত্যিকার অর্থেই একটি সুন্দর ও জনবান্ধব সরকারি প্রশাসন ব্যবস্থা প্রাপ্ত হবে। যার ফলে আগামী বাংলাদেশ হবে অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং বৈশ্বিকভাবে সত্যিই এক সুন্দর দেশ। তখন আগামী দিনের নাগরিকরা গর্ব করে বলতে পারবে আমরা বাংলাদেশী। 

রাজনীতিবিদদের কাছে আমাদের আকাঙ্ক্ষা আপনারা সবাই সদ্য পদত্যাগকারী উপদেষ্টা জনাব নাহিদ ইসলাম এর মত কাজ করুন, দেশের আপামর জনতার ভালোবাসার পাত্রে রূপান্তরিত হোন। তাহলে  আপনাদের জন্য সাধারণ মানুষের সর্বদা দোয়া থাকবে। আর এমন উদাহরণ সৃষ্টি করলে ভবিষ্যতে আপনাদের আর কারও কাছে ভোট চাইতে হবে না, আপনার শত্রুও আপনাকে পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত করার জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ। 

পরিশেষে মাননীয় সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বয়সে আপনি আমার তুলনায় তরুণ হলেও আপনার প্রতি অসীম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। আশা রাখছি আপনার স্বচ্ছ ও পজিটিভ রাজনীতি বাংলাদেশকে সত্যিকারের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করবে ইনশাআল্লাহ।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়: