Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

চাঁদাবাজি খতম করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট

চাঁদাবাজি খতম করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট
ছবি: সবার দেশ

চাঁদাবাজি শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। চাঁদাবাজি যারা করে তাদেরকে সাধারণ মানুষ একেবারেই পছন্দ করেননা, বরঞ্চ ঘৃণার চোখে দেখে। কিন্তু এ চাঁদাবাজির টাকা না হলে আবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো চলতে পারে না। 

তাই সব দলই সব সময় বিভিন্ন কায়দায় চাঁদাবাজি করে থাকে। কখনো তাদের দলীয় সমর্থক যারা ব্যবসায়ী এবং পয়সাওয়ালা লোক আছেন, তারা তাদেরকে চাঁদা দেন অথবা অন্য কোন উপায়ে তারা চাঁদা সংগ্রহ করেন, কিন্তু চাঁদা তাদের সংগ্রহ করতেই হয়। 

মজার ব্যাপার হলো যে, টাকা-পয়সাওয়ালা, ধনীক শ্রেণি যারা ব্যবসায়ী আছেন, তারাও নিজেরা ভবিষ্যতে লাভবান হওয়ার আশায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে স্বেচ্ছায় চাঁদা প্রদান করে থাকেন। পরবর্তীতে যখন দলীয় নির্বাচন আসে, তখন তাদের অনেকেই সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মনোনয়ন পেতে চান, কেননা তারা তো আগেই দলকে চাঁদা দিয়েছেন, এখনই মোক্ষম সময় এ সুযোগ গ্রহণ করার। সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে তারা সংসদ সদস্য হয়ে রাষ্ট্রে আইন প্রণয়নে নিজেদেরকে নিযুক্ত করেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায়, আইন প্রনোয়ন করার চেয়ে তারা নিজেদের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেন। তারা তাদের ব্যবসা প্রসারের জন্য রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৈধ অবৈধভাবে তারা নিয়ে থাকেন। বেশিরভাগ সময় জনসাধারণকে তারা ভুলে যান, জনসাধারণের সহায়তা করার  পরিবর্তে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পথেই তারা চলতে থাকেন। এভাবেই দিনকে দিন চলে আসছে আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশ। 

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে যখন ছাত্রদের কর্তৃক নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হওয়ার পরই চাঁদাবাজির কথাটা ইদানিং জনমনে বেশি বেশি আলোচিত, আলোড়িত, আন্দোলিত হচ্ছে। এছাড়াও বিদেশে বসে কিছু সাংবাদিক যারা রাষ্ট্রের কঠিনতম সময়ে জনতাকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন, এ ধরনের হাতে গোনা দু'তিনজন সাংবাদিক বর্তমানে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের দিকে ইঙ্গিত করে তাদের কোন কোন বড় নেতার নাম উল্লেখ করেই নেটিজেনদের মধ্যে তোলপাড় করে দিয়েছেন। প্রতিত্তোরে সে বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও কম যাননি, তারাও তাদেরকে প্রতিঘাত করেছেন তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে। তার মধ্যে ওই রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ একজনকে প্রতিত্তোরে বলতে শুনলাম যে, না তারা নাকি এখন আর চাঁদাবাজি করছেন না। তার মানে তার আগে করতেন এটা অন্তত প্রমাণ হয়ে গেলো তার কথার মাধ্যমে। তার কথা মতো বর্তমানে আরও দুটি রাজনৈতিক দল, একটি নতুন একটি পুরাতন দল চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে। নতুন রাজনৈতিক দলের কথা বোঝা যায় তিনি ছাত্র-জনতা কর্তৃক যে দলটি হয়েছে সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন। পুরাতন দল কোনটি পরিষ্কার বোঝা গেলো না। 

আরও পড়ুন <<>> অসৎ রাজনীতি বন্ধ, বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের ডাক

চাঁদাবাজির খারাপ দিক গুলোর মধ্যে দুই একটি আলোচনা করি- চাঁদাবাজি রাজনৈতিক শ্রমিক তৈরি করে, ফুটপাতে রাস্তায় অবৈধ দোকান মালিক তৈরি করে, যে কারণে রাস্তায় যানজটের তৈরি হয়, জনতার অধিকার খর্ব করে ইত্যাদি ইত্যাদি সে বিষয়ে অন্য কোন সময় লেখা যাবে আজ নয়। 

চাঁদাবাজি হোক বা না হোক সেটা বিষয় না; আসল বিষয় হলো আসুন না আমরা এ চাঁদাবাজি বন্ধে কাজ করি । নতুন পুরাতন কোন রাজনৈতিক দল নয়, কোন মানুষই কেনো এ ঘৃণিত চাঁদাবাজির কাজটি করবে? আসুন না, আমরা আমাদের মনের সুকুমারবৃত্তিগুলো ফুটিয়ে তুলি, যেনো চাঁদাবাজি চিরতরে মুছে দিতে পারি এবং চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাজনীতি করি। তাহলেই তো জনসাধারণের মনে আমরা স্থান পেতে পারি। সাধারণ জনতা যখন দেখবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক কর্মী বাহিনী সাধারণ জনতার স্বার্থের জন্য কাজ করছে, তখন তো ঐ সমস্ত রাজনৈতিক কর্মী বা ব্যক্তিকে তারা পছন্দের কাতারে নিয়ে নেবেন এবং পরবর্তীতে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁদেরকে ভোট দিবেন। এভাবে সহজেই তারা সম্মানিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারবেন। সংসদে গিয়ে দেশ মাতৃকার সেবার ব্রত নিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণমূলক আইন প্রণয়নে সহায়তা করবেন। দেশের আপামর জনতার স্বার্থ উপলব্ধি করে নিজের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও সাধনা দিয়ে জনকল্যাণমূলক কাজ করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।
 

সম্পর্কিত বিষয়: