Advertisement

প্রকৌশলী এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

নতুন ভাবে ভ্যাট বাড়ানোর ঘোষণা এবং জনতার ভাবনা

নতুন ভাবে ভ্যাট বাড়ানোর ঘোষণা এবং জনতার ভাবনা
ছবি: সবার দেশ

জনতার উপর কর বাড়িয়ে নয় বরং রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমিয়ে সুন্দর যোগ্য, সৎ, সেবক এর ভূমিকায় আমলাদের সাজিয়ে জনগণ বান্ধব স্বস্তিদায়ক বাংলাদেশ ও সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা করাই জনমুখী সরকারের কাম্য।

আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়ে গেলে নির্ঘাত সামনে সময় খারাপ যাবে, সেটা ব্যক্তি, সমাজ, দল, গোষ্ঠী বা রাষ্ট্র যেটি হোক না কেন তার বা তাদের জন্য। তাই যেকোনো সংগঠন ব্যক্তির পরিকল্পনা এমন হওয়া প্রয়োজন যে আমার যতটুকু আয় ব্যয় তার চেয়ে অবশ্যই অবশ্যই কম হতে হবে তা না হলে সামনে আমি আমার অবস্থান বজায় রাখতে পারবো না। 

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমাদের দেশ কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করতে পারেনি। যদিও বিগত সময় ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, দল শাসন করেছে বাংলাদেশকে। কিন্তু তারা জন আকাঙ্খার প্রত্যাশা পূরনে অতটা অর্থনৈতিক উচ্চস্থানে যেতে পারেনি। যদিও প্রতিটি দলই নিজ নিজ দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার সময় আমরা উন্নয়নের জোয়ার বয়ে দেয়ার মিথ্য প্রপাগান্ডা চালিয়েছেন।

সত্যিকারেরই যদি দেশের উন্নতি হতো, তাহলে আমাদের দেশে এত বেকারত্ব থাকতো না। এখনও জনগণের বৃহৎ একটি অংশ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন।

আরও পড়ুন>> সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী এবং দু’টি কথা

সম্প্রতি পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম যে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নতুন একটি অধিদফতর সৃষ্টি করা হয়েছে, যেখান থেকে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরকে পুনর্বাসন অথবা তাদের নিয়ে যে সমস্ত কর্ম পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করবে তা বাস্তবায়ন করবে। 

তার মানে আরেকটি অধিদফতর হবে ওখানে কিছু সরকারি আমলা এবং অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজন হবে। এতে সরকারের ব্যয় বাড়বে নির্ঘাত। আর সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি মানেই তো জনগণের উপর নতুন করে করের বোঝা আরোপিত হওয়া । কেননা সরকারের আয়তো জনগণের কর দিয়েই হয়। আর এ করের বোঝা বইতে বইতে সাধারণ জনতা করের চাপে দিন থেকে দিন ক্রমাগত আরো দরিদ্র হতে থাকে এবং সমাজের আরো একটি অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায়। 

আমাদের দেশে উচিত আমলাতন্ত্রের আমূল পরিবর্তন করা। এমন আমলাতন্ত্র প্রয়োজন যেখানে থাকবে সৎ, মেধাবী, যোগ্য, দক্ষ এবং সর্বোপরি নৈতিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, যারা নিয়ম কানুন পালন করবেন যথাযথভাবে । যাদের উপর রাজনৈতিক কোন হস্তক্ষেপ থাকবে না। আর থাকলেও তারা রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ও নৈতিকতার প্রশ্নে মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের যুক্তি প্রদর্শন করে  জনগণের উপর বাড়তি করের চাপ বাড়াতে নয় বরং কমাতে সহযোগিতা করবেন। যোগ্য আমলাদের এহেন সুন্দর কর্মকাণ্ডের জন্য রাষ্ট্রের নাগরিকরা স্বস্তিতে থাকবেন। দেশ এভাবে ক্রমাগত দারিদ্র্যসীমার কোটা শূন্যে নামিয়ে এনে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতির পথে ধাবিত হবে এবং সত্যিকারের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যময় সময় আসবে জাস্টিন নাগরিকদের জন্য। 

জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তীতে যে সরকার এখন দায়িত্বে আসীন আছেন, তারাই পারেন এ ঘুণে ধরা অদক্ষ রাজা এবং শাষকের মনোভাব পোষণকারী সিভিল সার্ভেন্ট বা আমলাতন্ত্রকে নতুন করে সাজিয়ে দেশের নাগরিকের জন্য সত্তিকারের সেবক তৈরি করতে।

লেখক: 
প্রকৌশলী এম এম এ শাহজাহান
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়: