Advertisement

এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ২১:৪৫, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২২:৩৭, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

কর্তব্যকর্মে অবহেলা, দায় কার?

কর্তব্যকর্মে অবহেলা, দায় কার?
ছবি: সবার দেশ

গ্রেফতার হওয়া ওসি শাহ আলম নিরাপদ হেফাজত থেকে পালিয়েছে। দেশের সকল মিডিয়া প্রচার করেছিলো সাবেক তথ্যমন্ত্রী আলী আরাফাত গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতার হয়েছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদও। সবই এসছে মিডিয়ায়। গ্রেফতারকৃত ফ্যাসিস্ট হাসিনার এসব দোসর গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে অজ্ঞাত।

৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে সেনাপ্রধান বলেছিলেন ৬২৫ জন আওয়ামী দুষ্কৃতিকারীকে দেশের বিভিন্ন ক্যন্টনমেন্টে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি তাদের মৃত্যুঝুঁকি বিবেচনা করে। ভালো কথা, তারা এখন কোথায়? এ প্রশ্নের জবাব দেয়ার দায়িত্ব সেনাপ্রধানের। এ দায়িত্ব প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাফিয়া হাসিনার হায়েনারদের থেকে সাধারণ জনগণকে রক্ষা করতে পারেননি সেনাপ্রধান, কিন্তু খুনিরা যখন ব্যাকফুটে, তখন তাদের রক্ষায় রাষ্ট্রযন্ত্র ঠিকই এগিয়ে এসেছে। নিরাপদে দেশত্যাগে তাদের সাহায্য করেছে বলেও অনেকের অভিযোগ।

তাহলে সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার প্রশ্ন-  আপনি এখন কি করবেন ?

থানা থেকে পালানো ওসি শাহআলম সম্ভবত ভারত চলে গিয়েছে, না এটি আমার কথা নয়। এটি বলেছেন আমাদের ডি এম পি কমিশনার সাহেব। ছি! কি লজ্জার কথা!

ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন, নিশ্চয়ই সীমান্ত পার হয়েছেন। তাহলে সীমান্তে যারা কর্তব্য কাজে নিয়োজিত ছিলো, তারা কি করেছেন? সেখানে কার কার গাফিলতি আছে, তা খুঁজে বের করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা জরুরী।

আরও পড়ুন: আত্মশুদ্ধির মাধ্যমেই রাষ্ট্রের সংস্কার সম্ভব

আমার মনে হয় এ ধরনের কেইসে বর্তমানে দেশে যারা আসামি হিসেবে আছেন, অন্তত তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের জন্য কোর্টে চালান দিন।  যাতে এরকম ঘটনা আর একটিও না ঘটে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন। তখন এ সকল আসামীরাও যদি সামনে আবার পালিয়ে যায়, তখন আপনাদের মুখে আর ওসি শাহ আলমের মতো ভারতে পালিয়ে গেছে বলতে হবে না। তাতে অন্তত আপনাদের পদমর্যাদা রক্ষা পাবে।  যাদের অবহেলায় এরকম কাজ হয়েছে, তাদেরকে সরাসরি বরখাস্ত করে আইনানুগ প্রাপ্য শাস্তির ব্যবস্থা করুন । প্রয়োজনে বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করে সাময়িক বরখাস্তের বিধান বাতিল করে সরাসরি বরখাস্ত করার বিধান চালু করুন। 

একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দাবি করছি পুরো ব্যাপারটি জাতির সামনে পরিষ্কার করার জন্য। আর এ ধরনের অপরাধে যারা অভিযুক্ত, তাদেরকে রক্ষার জন্য কেন অন্যান্য সার্ভিসের সরকারি কর্মকর্তারা তদবির করেন? তাদের তদবিরের দ্বারা সাধারণ জনতার কাছে কি মেসেজ পৌঁছায়? তারা কি তাহলে অপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছেন?

জনগণের করের টাকায় যাদের বেতন হয় তারাই জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ অপরাধীদের দোসর হিসেবেই চিহ্নিত হচ্ছেন জনতার আদালতে। এ ধরনের কাজের সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের একান্তভাবে উপলব্ধি করা প্রয়োজন যে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে ছাত্র-জনতা সোচ্চার হয়ে জেগে উঠেছিলো, ভবিষ্যতেও আপনারা তাদের হাত থেকে রেহাই পাবেন না।

তাই আসুন সবাই যার যার কর্তব্য কর্ম সঠিকভাবে পালন করে রাষ্ট্র এবং জনগণের সেবা করি।

লেখক: 
প্রকৌশলী এম এম এ শাহজাহান
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।