Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ২২ মার্চ ২০২৫

শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের প্রচেষ্টা

সংস্কারের সুপারিশ অনির্বাচিতদের ক্ষমতায় বসানোর কৌশল: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব বলেন, জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করণীয় হলো অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

সংস্কারের সুপারিশ অনির্বাচিতদের ক্ষমতায় বসানোর কৌশল: মির্জা ফখরুল
ছবি: সবার দেশ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটি নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের ভূমিকাকে খাটো করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের ক্ষমতায় বসানোর একটি কৌশল। শনিবার (২২ মার্চ) সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানান

মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের অগ্রাধিকার। বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের সংস্কার প্রচেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ঐক্যের চর্চা চালু রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য যেন কোনোভাবেই বিনষ্ট না হয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে এবং কোনো বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষার এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হওয়া যাবে না।

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত, যা জনমনে সংশয় সৃষ্টি করছে। প্রশাসনযন্ত্রকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।

তিনি আরও বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি করা যেতে পারে, যা নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করণীয় হলো অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

তিনি বলেন, একটি নির্বাচিত সরকারই জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালায় সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব থাকলেও স্প্রেডশিটে সেগুলোর উল্লেখ নেই। এটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

তিনি আরও বলেন, মূল প্রতিবেদনে প্রায় ১২৩টি সুপারিশ থাকলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ৭০টি প্রস্তাব উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে নির্বাচন সংস্কারের মূল প্রতিবেদনে ১৫০টির বেশি সুপারিশ থাকলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের মূল ভিত্তি বিএনপির ৩১ দফা প্রস্তাব। এটি ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই উত্থাপিত হয়। গণতান্ত্রিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমানসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সবার দেশ/কেএম