ঈদে এনসিপি নেতাদের ব্যাপক গণসংযোগের পরিকল্পনা
এনসিপি নেতারা ঈদকে একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন, যাতে তারা জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে শক্ত অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। ঈদের সময় গণসংযোগের মাধ্যমে তারা জনগণের কাছে নিজেদের পরিচিতি বৃদ্ধি করতে চান।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার করার জন্য ঈদুল ফিতরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচনা করছেন। ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনসহ দেশের অন্যান্য আসনে নেতারা ঈদের সময় বিভিন্ন জনসংযোগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, যার মাধ্যমে তারা জনগণের সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করার এবং নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।
আকরাম হুসেইন এবং ঢাকা-১৩ আসন
ঢাকা-১৩ আসনের জন্য আকরাম হুসেইন, যিনি এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব, তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তরুণদের সমন্বয়ে একটি দল গঠন করেছেন। এ দলটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় মানুষের সমস্যা ও সংকট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং এলাকায় খাল ও মাঠ রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ঈদুল ফিতরের সময় আকরামের নেতৃত্বে চাঁদরাতে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। তিনি ঈদের দিন মোহাম্মদপুর এলাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের কবর জিয়ারত এবং শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরিকল্পনা করেছেন।
এনসিপির অন্যান্য নেতাদের পরিকল্পনা
হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, যিনি নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে প্রার্থী হতে চান, তিনি গত কয়েক মাসে নিজ এলাকা সচল করেছেন এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও জনসংযোগ বৃদ্ধি করছেন। ঈদে তার জনসংযোগের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি নিজের নির্বাচনী এলাকা সফরের মাধ্যমে এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছেন।
সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ সংসদীয় আসন
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তিনি ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক ও জনসংযোগ চালাচ্ছেন এবং ঈদের সময়ও তার প্রচারণা অব্যাহত থাকবে। ঈদের সময়ে সারজিস পঞ্চগড়ের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য কাজ করবেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ ও কুমিল্লা-৪ আসন
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তিনি নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ঈদের সময় ওই এলাকার জনগণের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন।
নাহিদ ইসলামের পরিকল্পনা ঢাকা-১১ আসন
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বর্তমানে ঢাকা-১১ আসনের প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে, তার নির্বাচনী তৎপরতা এখনও দৃশ্যমান হয়নি, তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি ঈদের সময় বাড্ডা, ভাটারা, রামপুরা, বনশ্রী এলাকা সফরের পরিকল্পনা করছেন।
আখতার হোসেন ও রংপুর-৪ আসন
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। ঈদকেন্দ্রিক জনসংযোগে আখতার তার নির্বাচনী এলাকায় জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন।
এনসিপির অন্যান্য নেতাদের ঈদের পরিকল্পনা
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুর-৫ আসন
এনসিপির তরুণ নেতারা ঈদ উপলক্ষে তাদের জনসংযোগ জোরদার করেছেন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যিনি চাঁদপুর-৫ আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, ঈদে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তরুণদের বড় একটি অংশ বিজয়ী হবে।
এছাড়া, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুরে যুবকদের একত্রিত করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঈদে তিনি এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের প্রয়োজনীয়তাগুলি শুনবেন এবং আগামী নির্বাচনে এনসিপির প্রতি সমর্থন চাবেন।
ভোলা-১ আসন থেকে সামান্তা শারমিনের প্রচারণা
এনসিপির নারী নেত্রী, সামান্তা শারমিন ভোলা-১ আসনে প্রার্থী হতে চান। তিনি গত কয়েক মাসে ভোলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ঈদের সময়ও ভোলার জনগণের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত করার জন্য পরিকল্পনা করছেন।
এনসিপির নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা
এনসিপি নেতারা ৩০০ আসনে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করতে চান। তারা মনে করেন, আগামী নির্বাচনে প্রতিটি আসনে তাদের একটি দৃশ্যমান অবস্থান থাকা প্রয়োজন, যাতে নির্বাচনী প্রচারণা আরো শক্তিশালী হয়। এনসিপির সদস্যরা তাদের স্থানীয় জনগণের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা চাইবো, যেকোনোভাবেই হোক ৩০০ আসনেই যেন আমাদের একটা অবস্থান প্রকাশ করা যায়, যাতে এনসিপির নাম দেশের প্রতিটি এলাকায় পৌঁছে যায়।
এনসিপি নেতারা ঈদকে একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন, যাতে তারা জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে শক্ত অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ঈদের সময় গণসংযোগের মাধ্যমে তারা জনগণের কাছে নিজেদের পরিচিতি বৃদ্ধি করতে চায় এবং দলের কার্যক্রমে আরও দৃঢ়তা আনতে চেষ্টা করছে।
সবার দেশ/কেএম