Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৩২, ২ এপ্রিল ২০২৫

হতাশা বাড়ছে রিফাইন্ড লীগের

হতাশা বাড়ছে রিফাইন্ড লীগের, পলাতক হাসিনা দলীয় পদ ছাড়তে রাজি নন

সবচেয়ে বড় কথা বালাদেশের জনগন যে নামেই হোক চিহ্নিত আওয়ামী পরিচিতির কাউকেই এদেশের রাজনীতিতে আর মেনে নেবে না। ফ্যাসিজমের আউকন গুড়িয়ে দেয়া ধানমন্ডি ৩২ এর মতো পরাজিত ফ্যাসিস্ট দল হিসেবেই ইতহাসের পাতায় বেঁচে থাকবে আওয়ামী লীগ।

হতাশা বাড়ছে রিফাইন্ড লীগের, পলাতক হাসিনা দলীয় পদ ছাড়তে রাজি নন
ফাইল ছবি

৫ আগষ্টা পরবর্তী সময়ে দিল্লী মদদপুষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও সাবেক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী পলাতক হাসিনা এখনও দলের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট সংকেত দেননি। অথচ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।

আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও অনিশ্চয়তা

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের গুঞ্জন শোনা গেলেও বাস্তবে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দল পুনর্গঠনের দাবি উঠেছে জোরালোভাবে। দেশি-বিদেশি একটি কুচক্রী মহল আ্রয়ামী লীগকে ফের পূনর্বাসনের জন্য আদা-জল খেয়ে লেগেছে। তারা রিফাইন আওয়ামীলীগ নামে সম্ভাব্য নেতৃত্ব হিসেবে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর নাম সামনে আনছেন। তাদের অপেক্ষাকৃত 'ক্লিন ইমেজ' ও নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তাদের নেতৃত্বে আনার সম্ভাবনা জোরালো করেছে। তবে খুনি হাসিনার কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত মেলেনি।

দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দিন দিন হতাশা বাড়ছে, কারণ আওয়ামী লীগ বর্তমানে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এক সময়ের শক্তিশালী সংগঠনটি এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এখন জনশূন্য ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

নেতৃত্বের সংকট ও পরিবারের ভূমিকা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনা তার পরিবার ছাড়া অন্য কাউকে দলের নেতৃত্ব দিতে রাজি নন। পরিবারের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বা রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি—এদের কেউ নেতৃত্বে আসতে পারেন কি না, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। কিন্তু জাতিসংঘের রিপোর্ট, দুদকের তদন্ত, লন্ডনে টিউলিপ কেলেংকারীর পর দেশ-বিদেশে শেখের ফ্যামিলি ‘চোরের ফ্যামিলি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ‘চোরের ফ্যামিলি’ তকমা পাওয়া বিদেশে অবস্থানরত এ পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে ফিরে নেতৃত্ব নিতে কতটা আগ্রহী বা সক্ষম, সেটাও স্পষ্ট নয়। 

ভারতের ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক চাপ

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পলাতক হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং দেশটির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি কারও অজানা নয়। তবে ভারতের নীতি পরিবর্তন হলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতেও বড় পরিবর্তন আসতে পারে। অন্যদিকে, জাতিসংঘের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বিশেষ করে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের ওপর গভীর নজর রাখছে।

আইনি চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মতো গুরুতর অপরাধ। হাজার হাজার হত্যাকাণ্ড, গুম এবং লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগের মুখে তিনি নিজেকে কতদিন ধরে রাখতে পারবেন, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন, হাসিনা যদি আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের পথে না হাঁটেন এবং তার পরিবারের বাইরের কাউকে নেতৃত্ব দিতে না দেন, তাহলে দলের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়তে পারে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বহীন হয়ে পড়লে দলটির কর্মী-সমর্থকরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটিও এখন পর্যবেক্ষণের বিষয়।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েই চলেছে। শেখ হাসিনা কি সত্যিই দলের পুনর্গঠনে রাজি হবেন, নাকি তিনি পরিবারের বাইরে কাউকে নেতৃত্ব দিতে চাইবেন না—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হয়তো আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, আওয়ামী লীগের সামনে এখন এক কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতা অপেক্ষা করছে। সবচেয়ে বড় কথা বালাদেশের জনগন যে নামেই হোক চিহ্নিত আওয়ামী পরিচিতির কাউকেই এদেশের রাজনীতিতে আর মেনে নেবে না। ফ্যাসিজমের আউকন গুড়িয়ে দেয়া ধানমন্ডি ৩২ এর মতো পরাজিত ফ্যাসিস্ট দল হিসেবেই ইতহাসের পাতায় বেঁচে থাকবে আওয়ামী লীগ।

সবার দেশ/কেএম