Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২০ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ২১:৪৩, ২০ এপ্রিল ২০২৫

পার্টির বর্ধিত সভায় গোলাম কাদের 

‘সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন, তারা তো এলিয়েন’

‘সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন, তারা তো এলিয়েন’
ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম কাদের সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছেন, দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে যারা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে, তারা এলিয়েন, তারা যেন অন্য গ্রহ থেকে এসেছে। 

তিনি দাবি করেন, এ ধরনের সংস্কার কখনো বাস্তবায়ন হবে না এবং নির্বাচনে জয়ী রাজনৈতিক দলই প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। 

রোববার (২০ এপ্রিল ২০২৫) রাজধানীর বনানীস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয় মিলনায়তনে দলটির বর্ধিত সভার দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

গোলাম কাদের বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া দেশের মঙ্গল হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। ফলে দেশে বিনিয়োগ হবে না, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না, শুধু বেকারত্ব বাড়বে। তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, কলকারখানা বন্ধ, বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং কৃষকদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছিলেন। বর্তমান সরকারও তার সে ফর্মূলা অনুসরণ করছে। সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং এ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে। দেশে ব্যাপক চাঁদাবাজি চলছে।

নব্য ফ্যাসিবাদের অভিযোগ

গোলাম কাদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘বিভীষিকাময়’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছে। নব্য ফ্যাসিবাদ ও তার দোসররা সারাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফ্যাসিবাদের নামে দেশের মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার মতো একতরফা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলো নব্য ফ্যাসিবাদের অঙ্গসংগঠনের মতো আচরণ করছে। তিনি দেশের জনগণের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন, নব্য ফ্যাসিবাদকে রুখতে হবে, দোসরদের সোজা করতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে।

সংস্কার প্রস্তাবে অংশগ্রহণ

গোলাম কাদের এর আগে ১ জানুয়ারি ২০২৫-এ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলেছিলেন, সব দলের মতামত না নিলে সংস্কার টেকসই হবে না। জাতীয় পার্টিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের গুরুত্ব তুলে ধরে উল্লেখ করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার পরও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।

সভার অন্যান্য বক্তা

অনুষ্ঠানে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বক্তব্য রাখেন। এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সবার অবদান স্বীকার করতে হবে এবং অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। 

সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নাসরিন জাহান রতনা, শেরীফা কাদের, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ।

প্রেক্ষাপট

জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে গোলাম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেয়ার ঘোষণা দিলেও, গোলাম কাদের রওশন এরশাদের পদকে ‘আলংকারিক’ আখ্যা দিয়ে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ বর্ধিত সভা দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদার করার পাশাপাশি সরকারের নীতির সমালোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।

সবার দেশ/কেএম