Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

‘নিয়তির সন্তান’ 

‘দ্য উইক’ এ তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি

‘দ্য উইক’ এ তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ সাপ্তাহিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘দ্য উইক’ তার চলতি সংখ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে নিয়ে একটি কাভার স্টোরি প্রকাশ করেছে। ‘ডেসটিনি’স চাইল্ড’ বা ‘নিয়তির সন্তান’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনটি লিখেছেন ম্যাগাজিনের নয়াদিল্লি ব্যুরো প্রধান নম্রতা বিজি আহুজা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের বিএনপি ভাঙার চেষ্টা সত্ত্বেও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে এবং তিনি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সঙ্গে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৫৭ বছর বয়সী তারেক রহমান, যিনি ‘তারেক জিয়া’ নামে সমর্থকদের কাছে পরিচিত, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র। তার পিতা বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, এবং ১৯৮১ সালে তিনি নিহত হওয়ার পর খালেদা জিয়া দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তারেক বর্তমানে তার মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান ভার্চুয়ালি দলীয় নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় তার প্রত্যাবর্তন উল্লেখযোগ্য উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তার উপদেষ্টা মাহদি আমিন বলেন, তারেক রহমান ইতোমধ্যে চাকরি, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য সমান সুযোগ, ন্যায্য মজুরি এবং দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার জানান, তারেকের দৃষ্টিভঙ্গি জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তারেক ১৯৮৮ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০২ সালে তিনি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব নিযুক্ত হন এবং গণসংযোগের মাধ্যমে তরুণ নেতাকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে, তার মায়ের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিলো।

২০০৭ সালে সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি ও তার মা খালেদা জিয়া গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি পান। ১৬ বছরের নির্বাসনকালে তিনি ব্যক্তিগত ক্ষতি (ভাই আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু) এবং আইনি-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। তবুও, তিনি বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হন। ২০০৯ সালে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ২০১৮ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রতিবেদনে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ বিন আলীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, তারেকের নির্বাসন এবং রাজনীতি থেকে দূরে থাকার অঙ্গীকার ছিলো তার রাজনৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন। তিনি মনে করেন, তারেকের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা তাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, ঢাকায় ফিরে তিনি কতটা দক্ষতার সঙ্গে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

প্রতিবেদনটি শেষ হয়েছে এ মন্তব্যের মাধ্যমে যে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তন তারেক রহমানের জন্য একটি সুযোগ, যার মাধ্যমে তিনি তার পূর্বসূরিদের ধারা ভেঙে নিজস্ব উত্তরাধিকার গড়ে তুলতে পারেন। তিনি কেমন নেতা হবেন, তা সময়ই বলে দেবে।

এ প্রতিবেদনের তথ্য ‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনের চলতি সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি। তবে, তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উল্লিখিত দাবিগুলো বিশ্লেষকদের মতামতের ওপর নির্ভরশীল, যা সর্বজনগ্রাহ্য নাও হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের বাধা দূর হওয়ার বিষয়টি বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের ভূমিকা এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে জনমনে কৌতূহল রয়েছে। ‘দ্য উইক’-এর এ প্রতিবেদন তাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরেছে।

সবার দেশ/কেএম