ইতিকাফের ফজিলত ও বিধান

পবিত্র মাহে রমাদ্বান আগমন করলে মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে ইবাদতের মৌসুম জেগে উঠে। ইতিকাফ এমন একটি মর্যাদা পূর্ণ ইবাদত যা রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার সারা জীবনের অন্যতম আমল ছিলো।
ইতিকাফ আরবি শব্দ, অর্থ অবস্থান করা, আবদ্ধ করা। পরিভাষায়, ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আবদ্ধ রাখাকে ইতিকাফ বলা হয়।
প্রকৃত অর্থে, রমজান মাসের শেষ দশক তথা ২০ রমাদ্বানের সূর্যাস্তের আগে থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা শাওয়াল বা ৩০ রমজান পর্যন্ত ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়াহ। কোন মহল্লার পক্ষ থেকে কোন এককজন আদায় করলে পুরো সমাজ দায়মুক্তি পাবে।
উম্মাহাতুল মুমিনীন হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজীবন রমাদ্বানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তিনার ওফাতের পরও তিনার সন্মানিত বিবিরা নিজ নিজ ঘরে ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম, হাদিস-৫৪৬, পৃষ্ঠঃ ১২৯)
আরও পড়ুন <<>> রমাদ্বান আমাদের যা শিক্ষা দেয়
ইমাম জুহরি (রহঃ) বলেন, অনেক আমল তো নবীজী (সাঃ) কখনো করেছেন আবার কখনো ছেড়ে ও দিয়েছেন। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পর হায়াতে জিন্দেগীতে তিনি ইতিকাফ আমলটি ছাড়েননি। ফতহুল বারী (৮/২৫৮)
ইতিকাফের আমল
ইতিকাফে দুনিয়া চিন্তাভাবনা দূরে রেখে বেশি বেশি নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, হাদিস পাঠ, দরুদ শরীফ ইস্তিগফার, জিকির, তাসবিহ তাওবার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করতে পারলে সফলতা আসবে।
রমদ্বানের প্রকৃত সফলতা অর্জনে যেসব ইবাদতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় ইতিকাফ তার মধ্যে অন্যতম। আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং দুনিয়ার মোহ থেকে দূরে থাকার এক অনন্য মাধ্যম ধরা হয় ইতিকাফকে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ইতিকাফের বিষয়গুলো জেনে-বুঝে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন।
লেখক:
ধর্মীয় শিক্ষক
মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। মিরপুর, ঢাকা।