Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ এম এম এ শাহজাহান


প্রকাশিত: ১৬:২২, ২০ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৬:৩৫, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামী উত্তরাধিকার নীতিতে হস্তক্ষেপ মানে ধর্মদ্রোহিতা

ইসলামী উত্তরাধিকার নীতিতে হস্তক্ষেপ মানে ধর্মদ্রোহিতা
ছবি: সবার দেশ

যুগে যুগে ইসলামের শত্রু যারা, তারা কিন্তু তলে তলে তাদের সিদ্ধান্তে অটল। কেননা পলাতক, পতিত, স্বৈরাচারী সরকারের কাছেও তারা একই প্রস্তাবনা পেশ করেছিলো। সে সময় সরকার প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে অগ্রসর হলে  তুমুল জনরোষের কবলে পড়ে। অবশেষে সেটা তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি যদিও চেয়েছিলো। 

সরকারি পর্যায়ে যারা আইন প্রণয়ন, তদারকি এবং বাস্তবায়ন করে থাকেন তাদেরকে বুঝতে হবে ইসলামের শত্রু কারা, তারা কি চায়।

আপনি মুসলিম, কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করেন কিন্তু মানেন না, ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে মানতে পারছেন না। শয়তান আপনাকে ওয়াসওয়াসা দিয়ে মোহাবিষ্ট করে আপনার মনের এরকম অবস্থা তৈরি করেছে। আল্লাহর দেয়া আইন আপনার অপছন্দ হচ্ছে কোন সমস্যা নেই, চুপ থাকুন। আস্তে আস্তে নিজেকে তৈরি করুন, ইসলাম মেনে নিজেকে মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলুন। কিন্তু মুসলিম হয়ে সে কোরআনের আয়াত সম্বন্ধে আপনি বক্রতা অবলম্বন করবেন, সন্দেহ পোষণ করবেন এটি ঠিক নয়, আপনার দ্বারা এমনটি হওয়া উচিত নয়। যদি এমন ধারণা আপনাকে পেয়ে বসে, তাহলে নির্ঘাত আপনার বিরাট সমস্যা আছে । 

আপনি তো আস্তিক এবং পরকাল বিশ্বাসী, এমনটি করলে আপনার পরকাল বরবাদ হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনি নিশ্চিত জাহান্নামের অধিবাসী হবেন। মনে রাখবেন দুনিয়াবি কোন উচ্চতর ডিগ্রীর মানদণ্ড দিয়ে পরকালে বিচার হবে না, পরকালে বিচার হবে আল্লাহ কর্তৃক জানিয়ে দেয়া নিয়মে। যা আপনি আমি এবং এ পৃথিবীতে যারা বর্তমানে এমনকি কেয়ামতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত, যে আসবে, সবার জন্য একই নিয়ম। তাই ভাবুন, ইসলাম বিষয়ে কোনো প্রস্তাবনা বা নতুন কিছু তৈরি করতে চাইলে বা করার আগে দশবার ভাবুন।

আরও পড়ুন <<>> শবে বরাত ও দুটি কথা

মনে রাখবেন, কোরআনের আইন নাযিল হওয়ার পর থেকে ইসরাফিল আলাইহি সালামের শিঙ্গা ফুৎকার দেয়া মানে কেয়ামত সংগঠিত হওয়া পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে এবং সেটা মানাই একজন মুসলিমের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য, তা না হলে বিধিবাম।

আপনি অমুসলিম হলে কোন ক্ষতি নেই, অমুসলিম হিসেবে ইসলাম ধর্মের বিধান মানা বা না মানা ঐচ্ছিক। কোন অমুসলিম ব্যক্তি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের কাছে যে কোন প্রস্তাবনা পেশ করতেই পারেন, তাতে কোন সমস্যা নেই । কিন্তু একজন মুসলিম কখনো এ ধরনের প্রস্তাবনা পেশ করা তো দূরের কথা, আল্লাহ এবং পরকাল বিশ্বাসী হলে তার দ্বারা এরকমটি করা মহাপাপ।

উত্তরাধিকার আইন, সম্পত্তিতে নারী পুরুষের সমান অধিকার, এটি মুসলিমদের কর্তৃক বদলানো সম্ভব নয়। কেননা এটি একটি মৌলিক বিষয় যা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাতা'য়ালা কর্তৃক প্রণীত। এটা কোন একজন সজ্ঞান, সুস্থ মস্তিষ্কের মুসলিম নারী পুরুষ কেউ কখনোই করতে পারেন না। 

তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ বাংলাদেশে এ আইন করার প্রশ্নই ওঠে না। এতদবিষয়ে আমাদের ইসলামী পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ আগেও ফতোয়া দিয়েছেন, নিশ্চয়ই আবার এখনও দিবেন। আমার আশ্চর্য লাগে, এ প্রস্তাবনা যারা এনেছেন তাদের মধ্যে তো বেশিরভাগই মুসলিম নারীরা আছেন, তারা কিভাবে এ প্রসঙ্গটা আনলেন। এতে ইসলাম সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের অপরিপক্কতা প্রকাশ পাচ্ছে। তাই ধর্মীয় বিষয়ে অথবা ধর্মীয় আইনের সাথে অসংগতিপূর্ণ কোন বিষয়ে প্রস্তাবনা আনতে হলে, বিশেষ করে মুসলিম নর-নারী, তাদেরকে অবশ্যই বারবার ভাবতে হবে এবং প্রস্তাবনা আকারে পেশ করার পূর্বে অবশ্যই ইসলামী জ্ঞান সম্পন্ন পন্ডিত ব্যক্তিদের কাছে থেকে সঠিক পরামর্শ নিয়ে তা সাজাতে হবে। কেননা আইন একটি মৌলিক বিষয় এবং স্রষ্টা কর্তৃক আইনের বিরোধিতা করলে সে তখন আর সে ধর্মের লোক বলে বিবেচিত হতে পারেন না বরং স্রষ্টার রোষানলে পড়ে তার পরকালকে বরবাদ করে দেয়ার রাস্তা নিজেই করে নেন।

কোন দেশের সরকার একটি আইন কিভাবে করবে  তা সরকারি জায়গায় যারা আইন প্রণেতা হিসেবে আছেন তারা সিদ্ধান্ত নিবেন। কিন্তু কোন মুসলিম কর্তৃক এধরনের আইন প্রণয়ন, প্রস্তাবনা বা বাস্তবায়ন কোনটিই কখনও করা একেবারেই বৈধ নয়।

পরিশেষে যারাই এ লিখা পড়ছেন, সবার কাছে বিনীত অনুরোধ রইলো, আসুন আমরা নিজেকে মুসলিম হিসেবে তৈরি করে তারপরে কবরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকি। কেননা, মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেই কিন্তু পার পাওয়া যাবে না। আল্লাহর কঠিন বিচার অপেক্ষা করছে রোজ হাশরে আমাদের জন্য। কেননা, তিনি পবিত্র কুরআনে বলেছেন ‘তোমরা মুসলিম হওয়া ব্যতীত আমার কাছে এসো না’।

লেখক: 
এম এম এ শাহজাহান, প্রকৌশলী 
মার্কেটিং অ্যাডভাইজার, ফাইন গ্রুপ।

সম্পর্কিত বিষয়: