Advertisement

সবার দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:১২, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

বিয়ের উদ্দেশ্যে কী প্রেম করা যাবে?

বিয়ের উদ্দেশ্যে কী প্রেম করা যাবে?
প্রতীকি ছবি

প্রেম মানুষের অন্তরের একটি বিশেষ অবস্থার নাম, যা কারও প্রতি আবেগ, গভীর অনুভূতির সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়। প্রকৃত প্রেম হলো মহান আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি প্রেম, যা ছাড়া অন্য কোনও মানুষ ঈমানদার হতে পারবে না। 

দুনিয়ায় কেউ কাউকে ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মা ও রক্তের আত্মীয়দের প্রতি প্রেমও মহান আল্লাহ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত করে দেন।

পরনারী এবং পরপুরুষের মধ্যকার প্রেম নিঃসন্দেহে হারাম। একজন পুরুষ ও বেগানা নারীর মাঝে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যেটাকে মানুষ ‘প্রেম’ নামে অভিহিত করে থাকে; সেটা কতগুলো হারাম কাজ এবং শরিয়ত ও চরিত্র পরিপন্থী বিষয়ের সমষ্টি।

এ ধরণের সম্পর্ক হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন বিবেকবান ব্যক্তি সন্দেহ করতে পারে না। কারণ এতে রয়েছে— বেগানা নারীর সঙ্গে নির্জনে অবস্থান, বেগানা নারীর দিকে তাকানো, প্রেম ও অনুরাগমূলক কথাবার্তা; যে সব কথা যৌন কামনা ও চাহিদাকে উত্তেজিত করে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। (সূরা মায়িদা ৫)

তাছাড়া এ জাতীয় প্রেম নর-নারীকে জিনার নিকটবর্তী করে দেয়। আর জিনা মারাত্মক একটি কবিরা গুনাহ। জিনা তথা অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হারাম এবং যে সকল জিনিস জিনার নিকটবর্তী করে দেয় তাও হারাম। 

আল্লাহ তাআলা বলেন, আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (সূরা ইসরা ৩২)

প্রেম করলে শয়তান অবশ্যই জিনা করতে প্রলুব্ধ করবে। প্রেমিক-প্রেমিকা নির্জনতা কামনা করবে। আর এটা হারাম। 

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শুনে রাখ, কোন পুরুষ যেন কোন মহিলার সঙ্গে নিভৃতে একত্রিত না হয় অন্যথায় শয়তান অবশ্যই তৃতীয় জন হিসাবে হাযির থাকে। (ইবনু মাজাহ ২৩৬৩, তিরমিযি ২১৬৫)

অপর হাদিসে রাসূলুল্লাহ বলেছেন, দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (মেশকাত ১/৩২)

বলা বাহুল্য, এর সবগুলোই ধীরে ধীরে হারাম-প্রেমে অনুপ্রেশ করে থাকে।

এছাড়াও হারাম-প্রেম অনেক সময় বান্দাহকে শিরকের নিকটবর্তী করে দেয়। কারণ অনেক সময় তারা একে অপরকে এতটাই ভালবাসা শুরু করে দেয় যে প্রকার ভালবাসা পাওয়ার দাবিদার একমাত্র আল্লাহ। 

আল্লাহ তাআলা বলেন, আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালোবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা হয়ে থাকে। (সূরা বাক্বারা ১৬৫)

কাউকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যেও তার সঙ্গে বিবাহপূর্ব প্রেম নামে যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে, তা করার কোনো অবকাশ নেই। প্রশ্ন জাগতে পারে, অনেকের ক্ষেত্রে তা হয়তো শারীরিক সম্পর্কে না-ও গড়াতে পারে, সে ক্ষেত্রেও কি তা হারাম হবে? এর উত্তর খোঁজার জন্য এ হাদিসগুলোতে চোখ বোলানো যেতে পারে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চোখের ব্যভিচার হলো (বেগানা নারীকে) দেখা, জিহ্বার ব্যভিচার হলো (তার সঙ্গে) কথা বলা (যৌন উদ্দীপ্ত কথা বলা)। (বুখারি, হাদিস : ৬২৪৩)

সবার দেশ/এফএ
 

সম্পর্কিত বিষয়: