Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২০:৩৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ফেসবুক পেজে হাসনাতকে নিয়ে সারজিসের স্ট্যাটাস

ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেলেই ছুটে চলে ‘মাথা গরম’ ছেলেটা

আপনারা যারা শুধু ঘরে বসে স্যোশাল মিডিয়ার ঝড় তুলতে পারেন তাদের মতো সেইফ গেম প্লে না করতে পারাটা হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু তিক্ত সত্য এটাই যে, এ মাথা গরম স্বভাবওয়ালা ক্ষ্যাপা তরুণ প্রজন্মের কারণেই এ নতুন বাংলাদেশ।

ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেলেই ছুটে চলে ‘মাথা গরম’ ছেলেটা
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এমন পরিস্থিতিতে হাসনাতের পাশে দাঁড়ালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম। 

সমালোচনাকারীদের জবাব দিতে তিনি হাসনাতের পাশে দাঁড়িয়ে সারজিস বলেন, এ মাথা গরম ক্ষ্যাপা ছেলেটার (হাসনাত আব্দুল্লাহ) দোষ হচ্ছে- যখনই কোথাও অস্থিতিশীল অবস্থা দেখা দেয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায় তখনই কোনোকিছু চিন্তা না করে সমাধানের জন্য ছুটে যায় হাসনাত। হোক সেটা ক্যাম্পাস, রাজপথ কিংবা অন্য কোথাও।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা বলেন সারজিস। সারজিসের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ‘সবার দেশ’ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

সারজিস আলম বলেন, আশপাশে এমন বহু শত্রু আছে যারা সুযোগ পেলে খুন করে ফেলবে, এটা জানার পরও মবের মধ্যে ঢুকে মারামারি থামানোর কথা বলতে হেডম লাগে। অন্য কেউ এ সাহস করে নাই। সাহস করেছে হাসনাত আবদুল্লাহ। সাহসটা করার জন্যে হাসনাতকে মাথায় তুলে ফেলতে হবে সেটা বলছি না, তবে ন্যূনতম এপ্রিশিয়েটটা অন্তত করতে শিখেন। হয়ত ফলাফল প্রত্যাশিত হয়নি কিন্তু এর চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারতো৷ সবচেয়ে বড় কথা তার উদ্দেশ্য সৎ ছিল।

হাসনাতের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ ছেলেটার সমস্যা হলো এর মাথা গরম আর সবসময় গ্রেটার পার্সপেক্টিভ চিন্তা করে। কিন্তু সত্যি এটাই যে, মাথা গরম বলেই সে জুলাইয়ে ভিসি চত্ত্বরে গায়েবানা জানাজা শেষে যখন সবাই পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড আর ছোররা বুলেট দিকবিদিক ছুটে যাচ্ছিল তখন এ ছেলেটা সর্বপ্রথম স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ওই পুলিশের দিকে দুই হাত প্রশস্ত করে এগিয়ে যায় আর বলে উই আর ওপেন টু কিলড। ঠিক যেমনিভাবে গতকাল গিয়েছিলো।

সারজিস বলেন, এ ছেলেটাই সে জুলাইয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে রাজাকার রাজাকার মিছিলের সামনের সারিতে মাঝখানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো, যখন অনেকেই নিজেকে সেফ জোনে রেখেছিলো। এ ছেলেটাই সর্বপ্রথম এবং একা সচিবালয়ে আনসার লীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে এবং পরবর্তী সময়ে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সচিবালয় অনেকটা সুরক্ষিত হয়ে ওঠে। এ ‘মাথা গরম’ ক্ষ্যাপা ছেলেটার দোষ হচ্ছে যখনই কোথাও অস্থিতিশীল অবস্থা দেখা দেয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায় তখনই কোনো কিছু চিন্তা না করে সমাধানের জন্য ছুটে যায়। হোক সেটা ক্যাম্পাস, রাজপথ কিংবা অন্য কোথাও।

আপনারা যারা শুধু ঘরে বসে স্যোশাল মিডিয়ার ঝড় তুলতে পারেন তাদের মতো সেইফ গেম প্লে না করতে পারাটা হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু তিক্ত সত্য এটাই যে, এ মাথা গরম স্বভাবওয়ালা ক্ষ্যাপা তরুণ প্রজন্মের কারণেই এ নতুন বাংলাদেশ।

সারজিস আলম স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, কতজনের এখন কতরকম স্বার্থ আর ধান্ধা সেটা আমরা বুঝি, অপ্রত্যাশিত কিছু হলে এরা যে আবার গর্তে যাবে সেটাও জানি। কিন্তু দিনশেষে চোখের সামনে রক্ত আর হাজারো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা রক্ষা করতে হাসনাতরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের মতো গুটিকয়েক ভণ্ড, সুবিধাবাজ, কালপ্রিট কী বললো আর কী বিহেভ করলো তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। হাসিনার পোষারা এর চেয়ে কম বলেনি বা করেনি। মিনিমাম কমনসেন্স থাকলে বোঝা উচিত কারা করসে, কেন করসে। রকেট সাইন্স না বোঝাটা।

শেষে সারজিস আরও বলেন, আমরা হাসনাত এবং হাসনাতের সহযোদ্ধা হতে পেরে গর্বিত।

সবার দেশ/এমকেজে