Advertisement

সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:২২, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ দুর্নীতি 

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি! 

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি! 
ফাইল ছবি

নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আউট সোর্সিং জনবল সরবরাহের কাজ। ২০১৯ সালে প্রণীত ‘সেবা গ্রহণ’ নীতিমালার আওতায় এরই মধ্যে জনবল সরবরাহে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পাদিত হয়েছে চুক্তি বা নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (নোয়া)। সব ঠিকঠাক থাকলে যেকোনো দিন স্বাক্ষর হবে কার্যাদেশ। তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের। 

সূত্রটি জানায়, গত ২ অক্টোবর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ  আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগযোগ্য ১৯ ক্যাটাগরির ২৫৭ জনবল ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে সেবা দেবে। 

সিদ্ধান্ত মতো গত ৩ সেপ্টেম্বর অনলাইনে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে বুশরা সিকিউরিটিজ, মাছরাঙা সিকিউরিটিজসহ ১৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। শর্তাবলী যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠান ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হয়। সমস্ত শর্ত পূরণ করায় টিকে ছিলো মাছরাঙাসহ ৫টি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কোনো ধরণের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গত ১৭ ডিসেম্বর  চুক্তি সম্পাদন  করে ছাত্রলীগ নেতার ‘বুশরা সিকিউরিটিজ  সার্ভিস (প্রা:লি:)’র সঙ্গে। এর আগে সুকৌশলে টেন্ডার কারিগরি কমিটির নিজস্ব মূল্যায়ণে বুশরা সিকিউরিটিজকে সর্বোচ্চ নম্বর (৮০.১৮৭) পাইয়ে দেয়া হয়। এমন সুচারুভাবে কাজটি করা হয় যাতে ২০০৮ সালের পিপিআর অনুসারে আপাত দৃষ্টিতে আইনগত কোনো খুঁত ধরা না পড়ে। 

সূত্রটি জানায়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আ’লীগ আমলে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া  ডা: শফিউর রহমানের পছন্দের প্রতিষ্ঠান ‘বুশরা সিকিউরিটিজ লি:’। এ প্রতিষ্ঠানকে জনবল সরবরাহের কাজ পাইয়ে দিতে ভেতর থেকে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে কাজ করেন তিনি। 

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মেডিক্যাল কলেজটির সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া ‘বুশরা সিকিউরিটিজ প্রা:লি:’ কোম্পানিটির পরিচালক ডাকসাইটে ছাত্রলীগহ নেতা মোহাম্মদ সুজন মোল্যা। নিষিদ্ধঘোষিত ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র ঢাকা মহানগর (উত্তর)'র স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক তিনি।  জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যায় অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। পট পরিবর্তনের পর তিনি ‘খাঁটি ব্যবসায়ী’ বনে মিশে যান সাধারণ মানুষের সঙ্গে। 

পক্ষান্তরে বাছাই হওয়া ৫ প্রতিষ্ঠানের একটি ‘মাছরাঙা সিকিউরিটিজ প্রা:লি:’। এটির মালিক শেখ ইবাদুল হক রুবায়েদ। তিনি জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের অগ্রসৈনিক। জীবন বাজি রেখে সশরীরে তিনি আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ১২৩টি মামলার আসামি রুবায়েদ। ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্তৃক বহুবার হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কয়েকবার। চার বছর ১১দিন তিনি কারাগারে ছিলেন। গুমের শিকার হয়েছেন ২ বার। 

অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ব্যবসায়ী না পেয়ে কি করে ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হলো-জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: শফিউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, কে ছাত্রলীগ নেতা সেটি দেখার সুযোগ আমার নেই। টেন্ডারে কারিগরি কমিটি ছিলো। আমি কমিটির সুপারিশের ওপর স্বাক্ষর করেছি মাত্র। পিপিআর মেনে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে টেন্ডার করা হয়েছে। চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। আপনি আসুন, রেকর্ডপত্র দেখুন! ১৪/১৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সবাই কাজ পায় নি। তাদের ক্ষোভ থাকতে পারে। অনেক কথা থাকতে পারে। সেগুলোতো আমি অফিসিয়ালি কাউন্ট করতে পারি না। 

সবার দেশ

সম্পর্কিত বিষয়: