Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৪, ২৭ মার্চ ২০২৫

চাচা আকরাম খানের হৃদয়স্পর্শী অভিজ্ঞতা

‘বলা হলো তামিম আর বেঁচে নেই’

চিকিৎসকরা তাকে জানান, তামিমের ধমনিতে রিং বসানো হচ্ছে, অর্থাৎ তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে। এ ধরনের রোগী ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম থাকে, তবে আল্লাহর রহমতে তামিম ফিরে এসেছেন।

‘বলা হলো তামিম আর বেঁচে নেই’
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবালের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসার গল্পটি ভক্তদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও প্রশান্তি সৃষ্টি করেছে। ২৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) ম্যাচ খেলতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। এ ঘটনার পর পুরো ক্রিকেট বিশ্ব তার সুস্থতার জন্য চিন্তিত হয়ে পড়েছিলো।

প্রথমে তামিম নিজেই সাভারের কেপিজে হাসপাতালে যান। কিন্তু যখন তার অবস্থার অবনতি ঘটে, তখন তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার জন্য একটি হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছিলো। তবে দ্বিতীয়বার ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হওয়ায়, তাকে আর হেলিকপ্টারে ওঠানো সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত, তামিমকে কেপিজে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানে ২২ মিনিট সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) এবং ৩টি ডিসি শক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

চিকিৎসকদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে তামিমকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এরপর তার এনজিওগ্রাম করা হয় এবং ব্লক হয়ে যাওয়া ধমনিতে রিং (স্টেন্ট) বসানো হয়। চিকিৎসকদের কঠোর প্রচেষ্টায়, তামিম পুনরায় চিকিৎসা গ্রহণের জন্য স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেন।

তামিমের চাচা ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান তার ভাতিজার সংকটময় অবস্থার কথা স্মরণ করে গণমাধ্যমে বলেন, আমাকে বলা হয়েছিলো ‘তামিম আর বেঁচে নেই’। আকরাম জানিয়ে দেন, এ খবর শুনে তিনি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। এমন একটি খবর কল্পনাও করেননি তিনি। আকরাম আরও বলেন, এটা কল্পনা করতে পারিনি। কোনওদিন ভাবিওনি এ ধরনের খবর শুনবো। এত অল্প বয়সী ছেলের মতো। তবে, ঘণ্টা দেড়েক পর চিকিৎসকদের কাছ থেকে স্বস্তির খবর পেয়ে তিনি কিছুটা স্বাভাবিক হন। চিকিৎসকরা তাকে জানান, তামিমের ধমনিতে রিং বসানো হচ্ছে, অর্থাৎ তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে।

আকরাম খান আরও জানিয়েছেন, তামিমের সুস্থতায় ভক্ত-সমর্থকদের দোয়া ও শুভকামনার গুরুত্ব অনেক বেশি ছিলো। তিনি বলেন, তামিম যে জায়গা থেকে ফিরে এসেছে, আপনাদের দোয়া ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। প্রচুর কল-ম্যাসেজ পাচ্ছি, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আকরাম আরও জানান, চিকিৎসকরা বলেছেন যে, এ ধরনের রোগী ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম থাকে, তবে আল্লাহর রহমতে তামিম ফিরে এসেছেন।

তামিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে, তাকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আকরাম বলেন, এখন সে পর্যবেক্ষণে আছে। আরও ২-৩ দিন এ অবস্থায় থাকলে বাসায় নিয়ে আসতে পারবো। তবে যত দ্রুত সম্ভব, পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে দেশের বাইরে নিয়ে পরীক্ষা করাবো।

তামিমের চিকিৎসার এ সময়ের মধ্যে দেশের ক্রিকেট ভক্তরা তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন এবং একে অপরকে সমর্থন দিয়ে পাশে থেকেছেন। তামিম ইকবালের এ আশ্চর্যজনক পুনরুদ্ধার থেকে অনেকেই বড় ধরনের শিক্ষা পেয়েছেন—জীবনের অমূল্যতা এবং মানুষের সহানুভূতি ও সমর্থনের শক্তি।

সবার দেশ/এমকেজে

সম্পর্কিত বিষয়: