আর্থিক নিরাপত্তা ও মুনাফা বৃদ্ধির কৌশল
২৩৮ কোটি স্থানান্তরের ব্যাখ্যা বিসিবির

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের জবাবে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) থেকে ১২০ কোটি টাকা অনিয়মিতভাবে সরানোর অভিযোগ উঠেছিল, যা গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
তবে বিসিবি এ অভিযোগকে ‘ভুল তথ্যভিত্তিক’ ও ‘পরিকল্পিতভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টা’ হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে।
বিসিবির ব্যাখ্যা:
আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্যোগ:
ফারুক আহমেদ ২০২৪ সালের আগস্টে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক সংকট এবং বিগত বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে বোর্ডের আর্থিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেন। এর অংশ হিসেবে বিসিবি ব্যাংকিং সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করে এবং শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রীন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত নির্ভরযোগ্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নেয়।
টাকা স্থানান্তরের বিবরণ:
- ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়।
- এর মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনের ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করা হয়।
- বাকি ১২ কোটি টাকা বিসিবির পরিচালনা ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া:
বিসিবি জানায়, সভাপতি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। আর্থিক লেনদেনে স্বাক্ষরকারী হিসেবে ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম দায়িত্ব পালন করেন। সভাপতি এ ধরনের লেনদেনে স্বাক্ষরকারী নন।
আর্থিক সুবিধা ও ফলাফল:
- ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের ফলে বিসিবির স্থায়ী আমানত থেকে ২-৫% অতিরিক্ত মুনাফা অর্জিত হয়েছে।
- গত ছয় মাসে ব্যাংকিং অংশীদারদের কাছ থেকে ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ এবং অবকাঠামো উন্নয়নে ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে।
অভিযোগের পেছনে ‘ষড়যন্ত্র’:
বিসিবি দাবি করেছে, কিছু সুবিধাভোগী ও ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা ক্রিকেট প্রশাসনের মধ্যেও সক্রিয়, বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এ ধরনের অভিযোগ ছড়াচ্ছে।
বিসিবির অঙ্গীকার ও অনুরোধ:
বিসিবি স্বচ্ছ ও উচ্চমানের আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তথ্যভিত্তিক তদন্তকে স্বাগত জানায়। একই সঙ্গে, গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন বা ভুল তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।
বিসিবি দাবি করছে, ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বোর্ডের আয় বৃদ্ধি করেছে। তবে এ বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগ এবং জনমনে সৃষ্ট প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ নিরসনের জন্য স্বচ্ছ তদন্ত এবং আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে ক্রিকেটাঙ্গন।
সবার দেশ/কেএম