Advertisement

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৭:১৮, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লা লিগায় শেষ মুহূর্তের গোলে বার্সেলোনার মাঠে লিগ জয় আতলেতিকোর

বার্সেলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেতিকো

২০০৬ সালের পর এই প্রথম বার্সেলোনার মাঠে লিগ ম্যাচ জিতল মাদ্রিদের দলটি।

বার্সেলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেতিকো
ছবি: সংগৃহীত

নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটের খেলা চলছিল। স্কোরলাইনে তখন সমতা, ড্রয়ের পথে ম্যাচ। আচমকাই বার্সেলোনার জালে বল পাঠাল আতলেতিকো মাদ্রিদ। অবিশ্বাস্য, নাটকীয় এক জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠল দিয়েগো সিমেওনের দল।

বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে লা লিগার ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে আতলেতিকো।

২০০৬ সালের পর এ প্রথম বার্সেলোনার মাঠে লিগ ম্যাচ জিতল মাদ্রিদের দলটি। মাঝে জয়হীন ছিল তারা ১৮ ম্যাচে (৫ ড্র, ১৩ হার)।

প্রথমার্ধে একচেটিয়া দাপট দেখায় বার্সেলোনা। পেদ্রির গোলে এগিয়েও যায় তারা। বিরতির পর সমতা টানেন রদ্রিগো দে পল। ৯৬তম মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা আলেকসান্দার সরলথ।

গত মাসের শুরুতেও লিগ টেবিলে বার্সেলোনার চেয়ে ১০ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিল আতলেতিকো। সে তারাই বছর শেষ করল কাতালান দলটির চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে!

১৮ ম্যাচে ১২ জয় ও ৫ ড্রয়ে আতলেতিকোর পয়েন্ট হলো ৪১। ১৯ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমে গেল বার্সেলোনা।

লিগে হান্সি ফ্লিকের দলের বাজে সময়ও দীর্ঘায়িত হলো। আসরে প্রথম ১২ ম্যাচের ১১টিই জেতা দলটি তাদের পরের ৭ ম্যাচের ৬টিতেই হারাল পয়েন্ট। এর মধ্যে তাদের হার চারটি, ড্র দুটি, জয় একটি। ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচ হারল তারা।

আর আতলেতিকো লিগে টানা সাত ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১২ ম্যাচ জিতে বছর শেষ করল।

লামিনে ইয়ামালকে ছাড়া আত্মবিশ্বাসী শুরু করা বার্সেলোনা প্রথম ভালো সুযোগ পায় চতুর্থ মিনিটে। বক্সের ভেতর থেকে রাফিনিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন আতলেতিকোর এক ডিফেন্ডার। একটু পর ফের্মিন লোপেসের ক্রসে রবের্ত লেভানদোভস্কির হেড উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

প্রথম ১৫ মিনিটে ৭০ শতাংশ পজেশন ধরে রেখে প্রতিপক্ষের বক্সে ১৩ বার বল স্পর্শ করে বার্সেলোনা। এই সময়ে বল নিয়ে স্বাগতিকদের বক্সে ঢুকতেই পারেনি আতলেতিকো।

২১তম মিনিটে আতলেতিকোর বক্সে গিলানো সিমেওনের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে বার্সেলোনা। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। ভিএআরেও বদলায়নি সিদ্ধান্ত।

পরের মিনিটে ইনিগো মার্তিনেসের শট ঠেকান আতলেতিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক। ২৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গাভি।

আক্রমণে আধিপত্য ধরে রেখে ৩০তম মিনিটে গোলের দেখা পায় বার্সেলোনা। গাভিকে পাস দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন পেদ্রি। ফিরতি বল পেয়ে ডান পায়ের শটে জালে পাঠান ২২ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

এ নিয়ে এবারের লিগে পেদ্রির গোল হলো ৪টি।

প্রথম আধা ঘন্টায় গোলের জন্য পাঁচটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা। আতলেতিকো গোটা প্রথমার্ধে গোলের জন্য একটি শটও নিতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ পায় বার্সেলোনা। আলগা বল পেয়ে পেদ্রি বক্সে খুঁজে নেন ফের্মিনকে। ওয়ান-অন-ওয়ানে এই মিডফিল্ডারের শট পা দিয়ে ঠেকান ওবলাক।

৫৭তম মিনিটে অল্পের জন্য দ্বিতীয় গোল পায়নি বার্সেলোনা। ওবলাকের ওপর দিয়ে রাফিনিয়ার চিপ শট ক্রসবারে লাগে।

উল্টো দুই মিনিট পরই পাল্টা আক্রমণে সমতা ফেরায় আতলেতিকো। বক্সে হুলিয়ান আলভারেসের পাস ব্যাক-হিল ফ্লিকে ক্লিয়ারের চেষ্টায় পারেননি বার্সেলোনার মার্ক কাসাদো। বক্সের বাইরে থেকে শটে জালে পাঠান আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার দে পল।

৭৬তম মিনিটে দারুণ সুযোগ হারান লেভানদোভস্কি। সতীর্থের ক্রস দূরের পোস্টে পেয়ে ফেররান তরেস বল দেন ছয় গজ বক্সে, কিন্তু ঠিকমতো শট নিতে পারেননি পোলিশ স্ট্রাইকার।

পরের মিনিটে সুযোগ পেয়ে যায় আতলেতিকো। কাছ থেকে পাবলোর শট পা দিয়ে ফিরিয়ে বার্সেলোনাকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়া। ৮৬তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে রাফিনিয়ার শট ব্যর্থ করে দেন ওবলাক।

যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে বার্সেলোনার সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন সরলথ। ডান দিক থেকে নাহুয়েল মোলিনার পাস ফাঁকি দেয় বার্সেলোনার দুই খেলোয়াড়কে। প্রথম স্পর্শে বল জালে পাঠান ৭৩তম মিনিটে বদলি নামা সরলথ। বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে সফরকারীরা।

সবার দেশ/কেএম

সম্পর্কিত বিষয়: