বিপিএল টি-টোয়েন্টি
সিলেটের লড়াই থামিয়ে ঢাকার দ্বিতীয় জয়
নিয়ন্ত্রণহীন বোলিংয়ে অতিরিক্ত রানের পসরা সাজিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসের কাজ সহজ করে দিয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের বোলাররা।
শেষ ওভারে সিলেটের প্রয়োজন ২৩ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলই ছক্কায় উড়িয়ে দিলেন সামিউল্লাহ শিনওয়ারি। পরের বল ওয়াইড, এরপর আরেকটি চার। ম্যাচে তখন দারুণ নাটকীয়তা। টিভি পর্দায় ফুটে উঠল ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদের চিন্তিত চেহারা। তার মুখভঙ্গি বলছিল, ‘এই ম্যাচও হারতে হবে!’
কিন্তু না, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে যথাক্রমে আরিফুল ও শিনওয়ারিকে ফিরিয়ে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন মোস্তাফিজ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা ঢাকাকে ২৩ বলে ২৮ রানের শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও লিটন দাস। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬ বলে ২২ রানে আউট হন তানজিদ।
এরপর জেপি কোৎজি ৯ ও মোসাদ্দেক হোসেন ৪ রানে আউট হলেও সাব্বির রহমানকে নিয়ে ৩৮ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে দলের রান ১’শতে নেন লিটন। ২ ছক্কায় ২১ বলে ২৪ রানে থামেন সাব্বির।
দলীয় ১০৪ রানে সাব্বির ফেরার পর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। ব্যাট হাতে সিলেটের বোলারদের উপর চড়াও হন লিটন ও পেরেরা। পঞ্চম উইকেটে লিটন-পেরেরার ২৮ বলে ঝড়ো ৮১ রানের জুটিতে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৬ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা।
৩৮ বলে টি-টোয়েন্টিতে ৩০তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন লিটন। ১৯তম ওভারে পেসার রুয়েল মিয়ার বলে আউটের আগে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৪৮ বলে ৭০ রান করেন লিটন। ৩টি করে চার-ছক্কায় ১৭ বলে ৩৭ রানে আউট হন পেরেরা। টিপু সুলতান ও সামিউল্লাহ শিনওয়ারি ২টি করে উইকেট নেন।
জবাবে পঞ্চম ওভারে ৩২ রানে ২ উইকেট হারায় সিলেট। ওপেনার জর্জ মুনসি ৩ ও জাকির হাসান ৮ রান কওে সাজঘরের পথ ধরেন। তৃতীয় উইকেটে ৫৬ বলে ৮০ রানের জুটিতে সিলেটকে লড়াইয়ে ফেরা ওপেনার রনি তালুকদার ও অ্যারন জোন্স। এর মধ্যে ৩৩ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রনি।
রনির হাফ-সেঞ্চুরির পর জোন্সকে শিকার করে ঢাকাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেরেরা। ৩টি চার ও ১ টি ছক্কায় ৩২ বলে ৩৬ রান করেন জোন্স। ৯টি বাউন্ডারিতে ৪৪ বলে ৬৮ রান করেন রনি।
১৬তম ওভারে রনি ফেরার পর জয়ের জন্য ২৭ বলে ৭০ রান দরকার ছিলো সিলেটের। পঞ্চম উইকেটে ১৯ বলে ৪২ রানের ঝড়ো জুটিতে সিলেটের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন জাকের আলি ও অধিনায়ক আরিফুল হক। ১৯তম ওভারে জাকেরকে হারায় সিলেট। ৫টি চারে ১৩ বলে ২৮ রান করেন জাকের।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৩ রান দরকার ছিলো সিলেটের। পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের করা ঐ ওভার থেকে ২ উইকেটে ১৬ রান সংগ্রহ করে সিলেট। ২ চার ও ৩ ছক্কায় ১৩ বলে ২৯ রান করেন আরিফুল। ঢাকার মোস্তাফিজ ও পেরেরা ২টি করে উইকেট নেন।
এ জয়ে ৯ ম্যাচে ২ জয় ও ৭ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠস্থানে উঠলো ঢাকা। ৮ ম্যাচে ২ জয় ও ৬ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের তলানিতে নেমে গেল সিলেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৯৬/৬ (তানজিদ ২২, লিটন ৭০, কোটজি ৯, মোসাদ্দেক ৪, সাব্বির ২৪, পেরেরা ৩৭, শাফি ৪*, মুকিদুল ১*; সুমন ৪-০-৪৭-১, ৪-০-৩২-১, টিপু ৪-০-২৬-২, জোন্স ১-০-১৯-০, শিনওয়ারি ৪-০-২৭-২, আরিফুল ৩-০-৩৭-০)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৮৬/৭ (মানজি ৩, রনি ৬৮, জাকির ৮, জোন্স ৩৬, জাকের ২৮, আরিফুল ২৯, শিনওয়ারি ১২, সুমন ০*, রুয়েল ৪*; আবু জায়েদ ৩-০-২৫-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৬-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৪৬-২, নাজমুল ৪-০-২৭-০, মুকিদুল ২-০-৩১-১, শাফি ১-০-১৪-০, পেরেরা ৪-০-৩১-২)
ফল: ঢাকা ক্যাপিটালস ৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: থিসারা পেরেরা।
সবার দেশ/কেএম