বাংলাদেশি আর্থিক কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে তার পদত্যাগের কথা জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশি আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন ব্রিটেনের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন দুর্নীতির অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার মধ্যে থাকা টিউলিপ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিতি করেছে।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী পলাতক শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ এই এমপি লন্ডনে ফ্ল্যাট নিয়ে এবং বাংলাদেশে আর্থিক কেলেংকারি ও অনিয়ম নিয়ে আলোচনার মধ্যে ছিলেন।
লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।
এসবের মধ্যে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি।
পরে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো টিউলিপ এক্স হ্যান্ডেলে তার পদত্যাগের কথা জানান। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রের ছবিও পোস্ট করেন।
লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া এবং বাংলাদেশে একটি প্রকল্পে বড় অঙ্কের দুর্নীতিতে তার নাম আসার পাশাপাশি রাজধানীতে প্লট নিতে অনিয়মের অভিযোগও ওঠে টিউলিপের বিরুদ্ধে। এসব খবর আসার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে তাকে পদত্যাগের আহ্ববানের পাশাপাশি কিংবা প্রধানমন্ত্রীকে তাকে বাদ দেওয়ার পরামর্শও দেয়া হয়।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মত টিউলিপের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘুষ আর অনিয়মের মাধ্যমে পাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তারা অবৈধভাবে অন্য দেশে পাচার করেছেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে লন্ডনের কয়েকটি বাড়ি, যেগুলো টিউলিপ এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপহার দেয়া হয়েছে কিংবা বিনা পয়সায় থাকতে দেয়া হয়েছে। আর সেগুলো তাদের দিয়েছেন ধনাঢ্য বাংলাদেশিরা, যাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার যোগ আছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে কিংস ক্রসের একটি ফ্ল্যাট, যেটা ২০১৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের এক ব্যবসায়ী, যিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ। এখন ওই ফ্ল্যাটের দাম ৭ লাখ পাউন্ড। ওই ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে টিউলিপ থাকেন অন্য বাসায়।
সবার দেশ/কেএম