আগের তালিকা থেকে ৩ জন বাদ
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার: চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা
পুরস্কারের ঘোষিত তালিকা থেকে তিনজনের নাম বাদ দিয়ে চুরান্ত পদক তালিকা করেছে বাংলা একাডেমি। বাদ পড়াদের মধ্যে হলেন, মোহাম্মদ হাননান, ফারুক নওয়াজ ও সেলিম মোরশেদ। তাদের নাম বাদ দেয়ার বিষয়টি বুধবার বাংলা একাডেমির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জানা গেছে।
‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ ঘোষণা করা হয় ২৩ জানুয়ারি। এরপর ২৫ জানুয়ারি তালিকাটি স্থগিত করা হয়। তখন বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, নাম থাকা কারও কারও বিষয়ে কিছু অভিযোগ আসায় তালিকাটি স্থগিত করা হলো
বাংলা একাডেমি ওই দিন তিন কার্যদিবসের মধ্যে পুনর্বিবেচনার পর পুরস্কারের তালিকাটি পুনঃপ্রকাশ করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ছিলো তিন কার্যদিবসের শেষ দিন। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর বুধবার রাতে মোহাম্মদ হাননান, ফারুক নওয়াজ ও সেলিম মোরশেদের নাম বাদ দেয়ার কথা জানানো হয়। মোহাম্মদ হাননানকে মুক্তিযুদ্ধ ও ফারুক নওয়াজকে শিশুসাহিত্যে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিলো।
আর কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা স্থগিতের পর ২৭ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন। তাকে কথাসাহিত্যে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিলো।
বুধবারের সভায় স্থগিতকৃত পুরস্কৃত লেখক তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। সে অনুযায়ী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন মাসুদ খান (কবিতা), শুভাশিস সিনহা (নাটক ও নাট্যসাহিত্য), সলিমুল্লাহ খান (প্রবন্ধ/গদ্য), জি এইচ হাবীব (অনুবাদ), মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া (গবেষণা), রেজাউর রহমান (বিজ্ঞান), সৈয়দ জামিল আহমেদ (ফোকলোর)।
পুরস্কার ঘোষণা ও স্থগিতের পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়। ২৫ জানুয়ারি ফেসবুকে এক পোস্টে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেন, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার কমিটির সভায় উদ্ভূত সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবং পুরস্কার-তালিকাভুক্ত কারও কারও সম্পর্কে কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় পূর্বঘোষিত পুরস্কার পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন সম্পর্কে আলোচনা হয়। উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে অনুসন্ধানেরও সিদ্ধান্ত হয়। এমতাবস্থায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের তালিকা স্থগিত করা হলো।
ফারুকী বলেন, এখানে আমি একটু যুক্ত করতে চাই। যে আজব নীতিমালা এ ধরনের উদ্ভট এবং কোটারি পুরস্কারের সুযোগ করে দেয়, সেগুলা দ্রুত রিভিউ (পর্যালোচনা) করা উচিত।
২৬ জানুয়ারি সচিবালয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, তালিকায় নাম থাকা কারও বিষয়ে গণহত্যা ও জনবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে পুরস্কার বাতিল করা হবে।
বুধবার বাংলা একাডেমির পুরস্কার–সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন বাংলা একাডেমির পুরস্কারের জন্য গঠিত বোর্ডের সদস্য মোরশেদ শফিউল হাসান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, পুরস্কারের ঘোষণা স্থগিত করে পুনর্বিবেচনা বিষয়টি এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের জন্য বিব্রতকর। এটা পদত্যাগের প্রসঙ্গ নয়। পুনর্বিবেচনায় অংশগ্রহণ করবো না, এটা জানিয়েছি।
মোরশেদ শফিউল হাসান বাংলা একাডেমির ফেলো। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরস্কারসংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে একটি পোস্টও দিয়েছেন।
বাংলা একাডেমির নির্বাহী কমিটির পদ থেকে ২৯ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন কবি সাজ্জাদ শরিফ। তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে পদত্যাগের কথা জানান।
সাজ্জাদ শরিফ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি ও একাডেমির পদগুলোর যে অমর্যাদা ঘটেছে, সে অবস্থায় দায়িত্ব পালন করে যাওয়া নৈতিকভাবে আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
সবার দেশ/এমকেজে