Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৮ মার্চ ২০২৫

ব্যাংককেও হচ্ছেনা এ দু’নেতার বৈঠক- জানালো ভারত

ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে ভীত মোদি!

আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অধ্যাপক ইউনূসের মধ্যে মুখোমুখি কোনো বৈঠক হয়নি। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার বৈঠকের চেষ্টা করা হলেও, তা সফল হয়নি ভারতের অনীহার কারণে।

ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে ভীত মোদি!
ফাইল ছবি

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হতে চলা বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে না বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বৈঠক নিয়ে ভারত সরকার আগে কিছু ইঙ্গিত দিলেও, শেষ পর্যন্ত এটি নিশ্চিত করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্যাংককে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামী ৩ এপ্রিল এ বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী একত্রিত হয়ে দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলবেন। এটি মোদির ব্যাংকক সফরের একমাত্র দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।

বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী মোদি শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে ব্যাংককে থাইল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে, অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির আনুষ্ঠানিক কোনও বৈঠক হবে না। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, সম্মেলনের ফাঁকে সৌজন্য বিনিময়ের মাধ্যমে দুই নেতার মধ্যে কোনো আলোচনা হতে পারে, তবে তা আনুষ্ঠানিকভাবে নয়।

বাংলাদেশের কূটনৈতিক অনুরোধ এবং ভারত সরকারের নিরুত্তর অবস্থান

বিমসটেক সম্মেলনের সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে কূটনৈতিক স্তরে অনুরোধ জানানো হয়েছিলো যে, প্রধানমন্ত্রী মোদি যেন অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এ অনুরোধ জানানো হয়, কারণ অধ্যাপক ইউনূস ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। বাংলাদেশ জানায় যে, অধ্যাপক ইউনূস ভারত সফরের জন্য একটি বার্তা পাঠিয়ে এ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তবে ভারত পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অধ্যাপক ইউনূসের মধ্যে মুখোমুখি কোনো বৈঠক হয়নি। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার বৈঠকের চেষ্টা করা হলেও, তা সফল হয়নি ভারতের অনীহার কারণে।

ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির সৌজন্য বিনিময়

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের পর অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। একইভাবে, গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষেও তিনি ইউনূসকে চিঠি পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তবে, এ শুভেচ্ছা বিনিময় আনুষ্ঠানিক বৈঠকের চেয়ে আলাদা।

এখনও পর্যন্ত, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি বা দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য বড় কোনোও পদক্ষেপ দেখা যায়নি, তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলির মতে, ভবিষ্যতে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা আরও বাড়ানোর জন্য প্রাথমিক ভিত্তি তৈরি হতে পারে।

কূটনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ বৈঠকের অনুপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য কিছুটা হতাশাজনক হতে পারে, বিশেষ করে যখন তাদের পক্ষ থেকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিলো। তবে, তারা এটাও মনে করছেন যে, সৌজন্য বিনিময়ের মাধ্যমে যদি দুই নেতা আলাপ-আলোচনা করেন, তাও ভবিষ্যতে সম্পর্কের জন্য একটি ইতিবাচক সূচনা হতে পারে।

এছাড়া, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের আগ্রহ ছিলো দু'দেশের সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করার জন্য, তবে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না।

অতএব, বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে মোদির আনুষ্ঠানিক বৈঠক না হওয়া এবং ভারত সরকারের দৃষ্টিকোণ কিছুটা নেতিবাচক হওয়ার কারণে এ পরিস্থিতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক আলোচনার জন্ম দিতে পারে।

সবার দেশ/কেএম