Advertisement

সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০১:২৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

২০২৪ এর সেরা ভাইরাল কথন

‘শেখ হাসিনা পালায় না’

‘শেখ হাসিনা পালায় না’
ছবি: সংগৃহীত

সে সময়ও তিনি প্রধানমন্ত্রী। একটানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে রাখার পর নিজেকে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা বলে দাবি করেছিলেন। ক’মাস আগেও বলেছিলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালায় না, পালাতে জানে না। বাংলাদেশের মতো বিশ্ব মিডিয়ায়ও তার এ কথা ব্যপক ভাইরাল হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ভারতে বিতাড়িত হাসিনা তার না পালানোর কথা বলেছিলেন। যদিও যুগে যুগে আওযামী লীগের পালানোর ইতিহাস রয়েছে।

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিলেন শেখ হাসিনা। নিজের দলের শীর্ষ নেতাদেরও এ বিষয়ে কিছু জানাননি।

গত ২২ জুলাই নিজ কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে হাসিনা বলেন, দেশকে যখন আমরা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি, তখন দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনা পালায়নি, পালায় না।

চীন সফর শেষে গত ১৪ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, অনেকেই বলেছে প্রধানমন্ত্রী পালিয়েছে, শেখ হাসিনা পালায় না। গত ১ আগস্টও (মঙ্গলবার) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে না যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, তীব্র গণজোয়ার শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। তার ওই বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, পালিয়ে যায়নি কখনও। তবে সে বক্তব্য এবং সে আত্মবিশ্বাস মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হতবাক ও বিস্মিত।

গত ২০ আগস্ট দেশের প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণহত্যাকারী হাসিনা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলো। এখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণকারী হাসিনা পালিয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা আপনারা আপনাদের যার যার সংবাদপত্রে নির্ভয়ে এ শব্দটি লিখবেন ‘হাসিনা পালিয়েছে’। ‘হাসিনা পালিয়েছে’ শব্দটির পরিবর্তে কোনো গণমাধ্যম যদি ভিন্ন শব্দ প্রয়োগের অপকৌশল নেন সেটি জনগণের কাছে আপনাদের বিবেকের স্বাধীনতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

শেখ হাসিনার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও অবিভক্ত কেরানীগঞ্জের চারবারের এমপি আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালায় না, ভেগে যায়।’

আমান বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট আর জুলুম চালিয়েছে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন, যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন। দুদিন আগেও পালাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েও তিনি ভেগে গেছেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনা নাকি পালাবে না, তাহলে কি তিনি দাওয়াত খেতে গেছেন?

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালায়, কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কখনো পালায় না। শেখ হাসিনা দম্ভ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বলেছিলেন শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা কখনো দেশ থেকে পালাবে না। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি তার দলবল, এমপি -মন্ত্রী সবাইকে ফেলে নিজেই দেশ থেকে পালিয়ে গেলেন।

সবার দেশ/এওয়াই

সম্পর্কিত বিষয়: