Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:২৭, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০০:৩৫, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পিএসসির নতি 

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত
ফাইল ছবি

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। রোববার (২৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে পিএসসি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানায়।  

গত কয়েকদিন ধরে পিএসসি সংস্কার ও পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের লাগাতার অবস্থান, অবরোধ এবং আলটিমেটামের মুখে অবশেষে পিএসসি পরীক্ষাটি স্থগিতের ঘোষণা দিলো।  

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৮ মে শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি পরস্পর সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে যারা উভয় পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন, তাদের মারাত্মক চাপ ও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।  

শুধু সময়সূচি নয়, খাতা মূল্যায়ন ও ক্যাডার চয়েস পরিবর্তন সংক্রান্ত নানা অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এ প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পিএসসি সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নামেন।  

আন্দোলনকারীদের মূল দাবিগুলো

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—  

  • ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নতুন করে তৈরি করা।  
  • ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শেষ হওয়ার পর ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেয়া।  
  • খাতা মূল্যায়নে স্বচ্ছতা আনতে পরীক্ষার্থীদের সামনে বসে খাতা দেখানোর ব্যবস্থা করা।  
  • পিএসসির সদস্য সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জনে বাড়ানো।  
  • ভাইভা শেষে এবং চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগে ক্যাডার পছন্দ সংশোধনের সুযোগ দেয়া।  

এছাড়া আরও দাবির মধ্যে রয়েছে— ৪৫তম থেকে ৪৭তম বিসিএস পর্যন্ত ভাইভার আগে ক্যাডার চয়েস সংশোধনের ব্যবস্থা করা, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কাট-অফ মার্ক প্রকাশ করা, রুটিন কমপক্ষে দুই মাস আগে প্রকাশ করা, সুপারিশ প্রক্রিয়া ও ভেরিফিকেশন স্বচ্ছ করা এবং গেজেট প্রকাশের পদ্ধতি সংস্কার করা।  

বিশেষ দাবি হিসেবে ৪৪তম বিসিএসে ক্যাডার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নন-ক্যাডার বিধিমালা ২০২৩-এর সংস্কার করার দাবিও তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা।  

পিএসসির পূর্ববর্তী অবস্থান

৯ এপ্রিল পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার শাখা) মাসুমা আফরীনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, পরীক্ষার তারিখ পেছানো সম্ভব নয়। সেখানে বলা হয়, যদি কোনও প্রার্থীর ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা একই দিনে পড়ে, তবে বিষয়টি কমিশনকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছিল, কমিশন বর্তমানে ৪৪, ৪৫, ৪৬ ও ৪৭তম বিসিএস এবং নন-ক্যাডার নিয়োগের বিভিন্ন জট নিরসনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং প্রার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে সচেষ্ট রয়েছে।  

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া

পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণাকে আন্দোলনকারীরা আংশিক সাফল্য হিসেবে দেখছেন। তবে তারা বলছেন, শুধু পরীক্ষা স্থগিত নয়, তাদের পূর্ণাঙ্গ দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।  

শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া এক পরীক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার সিদ্ধান্ত পিএসসির ভুল নীতির স্বীকৃতি। এখন আমাদের আন্দোলন হবে পরীক্ষা প্রক্রিয়া এবং পিএসসি সংস্কারের জন্য।

পিএসসি এখন নতুন পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ এবং আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো পর্যালোচনার প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানা গেছে। তবে কবে নাগাদ নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে, সে বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।  

সবার দেশ/কেএম