‘দমবন্ধ পহেলা বৈশাখ’ নিয়ে শাওনের ক্ষোভ
জনতা নিজে নিজে উত্তেজিত হয় না: শাওন

অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন পহেলা বৈশাখ নিয়ে গভীর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন, যাকে তিনি ‘দমবন্ধ করা’ ও ‘অবরুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত তার একটি দীর্ঘ লেখায় বাঙালির এ ঐতিহ্যবাহী উৎসবের পরিবর্তিত রূপ নিয়ে তিনি আক্ষেপ করেছেন, তবে ঘরোয়াভাবে উৎসব পালনের প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আটক হওয়ার পর এটিই তার প্রথম উল্লেখযোগ্য সামাজিক বিষয়ে মন্তব্য।
বৈশাখের স্মৃতি ও বর্তমানের বৈপরীত্য
শাওন তার লেখায় শৈশবের পহেলা বৈশাখের উচ্ছ্বাসের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ছোটবেলায় রমনা বটমূল, ছায়ানটের গান দিয়ে দিন শুরু হতো। রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম, রঙিন মুখোশ কিনতাম। চারদিকে লাল-সাদার ঝলকানি দেখে মনে হতো, গোটা বাংলাদেশ ঝলমল করছে। কিন্তু এবারের বৈশাখ তাকে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, এমন অবরুদ্ধ পহেলা বৈশাখ কখনও দেখিনি, ভাবিনি এমন হবে।
নাম পরিবর্তনের সমালোচনা
শাওন বৈশাখ উৎসবের নাম পরিবর্তন নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপের অংশ। তিনি লিখেছেন, নামের মধ্যেও ধর্ম খুঁজে বের করা হচ্ছে। এমনকি ‘আনন্দ’ শব্দটার মধ্যেও অনেক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি মনে করেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি একটি বিশেষ গোষ্ঠী পছন্দ করে না, এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের জেরে এ নাম বদলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা যা ভেবেছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি পরিবর্তন হয়েছে।
ঘরোয়া উৎসবে প্রত্যয়
তবুও হতাশার মধ্যেও শাওন বৈশাখ পালনের সিদ্ধান্তে অটল। তিনি লিখেছেন, আমি পরিবার ও প্রিয়জনদের নিয়ে ঘরে উৎসব পালন করব। ইলিশ-পান্তার চেয়ে ভর্তা আর দেশীয় মাছ বেশি পছন্দ করি। ঘরকেও দেশীয় সাজে সাজাব। এ ঘরোয়া উৎসবের মাধ্যমে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে চান।
মব সংস্কৃতির উদ্বেগ
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শাওন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে ‘মব সংস্কৃতি’ বা উত্তেজিত জনতার প্রবণতা নিয়ে। তিনি বলেন, জনতা নিজে থেকে উত্তেজিত হয় না, পেছনে কোনো ইন্ধন থাকে। তিনি সরকারের কাছে এই প্রবণতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি হতাশা সত্ত্বেও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখা অব্যাহত রাখেন। তিনি লিখেছেন, মাঝেমধ্যে হতাশ লাগে, তবু দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
সবার দেশ/এমকেজে