Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৭, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশিদের ব্যয় বাড়লো

ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমলো দেশ-বিদেশে 

ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমলো দেশ-বিদেশে 
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডধারীদের খরচ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ জানুয়ারির তুলনায় ৫ শতাংশের বেশি কমে ২৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। একইভাবে, বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ ১৬ শতাংশ কমে ৩৮৪ কোটি টাকায় নেমেছে। তবে, বাংলাদেশে ভ্রমণরত বা বসবাসকারী বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ বেড়ে ২৬৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ ছিল ৩১৩ কোটি টাকা, যা ফেব্রুয়ারিতে ১৬ কোটি টাকা কমে ২৯৭ কোটি টাকায় নেমেছে। বিদেশে খরচের ক্ষেত্রে, জানুয়ারির ৪৪৬ কোটি টাকার তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে ৬২ কোটি টাকা কমে ৩৮৪ কোটি টাকা রেকর্ড করা হয়েছে। এ হ্রাসের পেছনে মূল্যস্ফীতি, ভোক্তাদের সতর্ক ব্যয় নীতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারিতে বিদেশিরা ২৫৩ কোটি টাকা খরচ করলেও, ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে ২৬৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ১৫ কোটি টাকার বৃদ্ধি নির্দেশ করে। 

ডিপার্টমেন্ট স্টোর (৩৪.২৬ শতাংশ) এবং নগদ উত্তোলন (২৭.৪২ শতাংশ) বিদেশিদের খরচের প্রধান খাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ভিসা কার্ড এ লেনদেনের ৬৪.১০ শতাংশ পরিচালনা করেছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইস্যুকৃত কার্ডগুলো সর্বোচ্চ (২৬.৪৯ শতাংশ) ব্যবহৃত হয়েছে।

বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডধারীদের বিদেশে খরচের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে রয়েছে, যেখানে ফেব্রুয়ারিতে ৫২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তবে, এটি জানুয়ারির তুলনায় কম। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমে ২৯ কোটি টাকায় নেমেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৩৩ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুন মাসে ভারত বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড খরচের শীর্ষ গন্তব্য ছিল (৯২ কোটি টাকা), কিন্তু ভারতের কঠোর ভিসা নীতির কারণে এ খরচ ক্রমাগত কমছে।

দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে ডিপার্টমেন্ট স্টোর (৪৮.৬৪ শতাংশ), রিটেইল সার্ভিস (১৩.০৮ শতাংশ), এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধ (৮.৫৪ শতাংশ) প্রধান খাত হিসেবে রয়েছে। ভিসা কার্ড দেশীয় লেনদেনের ৭২.১১ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের ৭৫.৩৬ শতাংশ পরিচালনা করেছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং ফেব্রুয়ারির সংক্ষিপ্ত মাস হওয়ায় ভোক্তারা সতর্কতার সঙ্গে খরচ করেছেন। মাস্টারকার্ডের বাংলাদেশ প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন সাধারণত কম হয়, কারণ এটি ছোট মাস এবং এতে দুটি সরকারি ছুটি ছিলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চে ক্রেডিট কার্ডে খরচ সর্বোচ্চ (৩,৪৯০ কোটি টাকা) ছিলো, কিন্তু জুলাই-আগস্টে অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ডলার সংকটের কারণে খরচ কমে যায়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ খরচ কমার প্রবণতা অর্থনৈতিক সতর্কতা এবং ভোক্তা আচরণের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিপরীতে, বিদেশিদের খরচ বৃদ্ধি পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভ্রমণের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

সবার দেশ/কেএম