দুদকের ৩ মামলা
আমু পরিবারের ৩৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তার স্ত্রী সৈয়দা হক মেরী এবং মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে। মোট ৩৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলাগুলো করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে ২৬ কোটি ২৭ লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া, তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৪৭ লাখ ৯২ হাজার ৭০৮ টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
তার স্ত্রী সৈয়দা হক মেরী ও আমুকে আসামি করে দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, মেরীর কোনও বৈধ আয়ের উৎস না থাকা সত্ত্বেও স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ উপায়ে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া, তার নামীয় ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ ৪১৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
মেরীর মেয়ে সুমাইয়া হোসেন ও আমুকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পিতার সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন সুমাইয়া। তাছাড়া, তার নামীয় ১৮টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মামলাগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২ মার্চ ২০২৫ তারিখে আদালত আমু, তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ৪৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন। এসব হিসাবে মোট ১৮ কোটি ৩৯ লাখ ৯২ হাজার ৫৭৪ টাকা জমা ছিলো।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিলো, আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, টেন্ডার বাণিজ্য, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তারা পলাতক অবস্থায় ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন ও স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। তাই, এ ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন ছিলো।
এ মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সবার দেশ/কেএম