‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ নিয়ে মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়
ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের শিক্ষিকা তাহমিনা

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) প্রভাষক তাহমিনা রহমান শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে করা এক মন্তব্যের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। পরে ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
গতকাল ৭ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানার পর ক্লাসে না এলে ‘ডাবল অ্যাবসেন্ট’ দেয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন প্রভাষক তাহমিনা রহমান।
এ কথোপকথনের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।
স্ক্রিনশটে দেখা যায় তাহমিনা রহমান লেখেন, আগামীকাল যদি কেউ ক্লাস মিস দিয়ে স্ট্রাইকে যেতে চাও, যেতে পারো। আমি তাকে দুইটা অ্যাবসেন্ট দিয়ে দেবো... বাজে এক্সকিউজ দেখাও, তাহলে এটি একটি সতর্কবার্তা।
রোববার দিনভর চলা সমালোচনার পরে মধ্যরাতে তাহমিনা রহমান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে লেখেন, আমি গভীরভাবে দুঃখিত।... আমি কখনোই ফিলিস্তিন ও গাজার মজলুম মুসলিমদের উপর ইসরাইলের ঘৃণিত হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করিনি, করবো না।... স্ক্রিনশটগুলো আমার প্রকৃত মনোভাব প্রতিফলিত করে না।... আমি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিকে কঠোরভাবে সমর্থন করি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তিনি বুঝতে পারেননি এটি একটি বৈশ্বিক প্রতিবাদ কর্মসূচি এবং নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত ভেবেছিলেন বলেই এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার বলেন, এমন একটি নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করবে—এটাই স্বাভাবিক। কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য কাউকে ‘ডাবল অ্যাবসেন্ট’ দেখানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের চলমান গণহত্যা ও বর্বরতার বিরুদ্ধে ‘No Work, No School’ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থীও।
এ ঘটনা স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয় যে, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম শুধু নিজেদের শিক্ষার গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—তারা বিশ্ব রাজনীতি ও মানবিক সংকট নিয়ে সোচ্চার, সচেতন ও প্রতিক্রিয়াশীল। অন্যদিকে, শিক্ষকদের দায়িত্ব তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো এবং সহানুভূতির সাথে পরিস্থিতি বোঝা।
সবার দেশ/কেএম