Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৩৭, ৭ এপ্রিল ২০২৫

‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য 

ড্যাফোডিল শিক্ষক তাহমিনাকে বহিষ্কার

ড্যাফোডিল শিক্ষক তাহমিনাকে বহিষ্কার
ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে চলমান ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও অবস্থান নেয়ার সময়, এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। এরপরই সামাজিক চাপের মুখে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (DIU) শিক্ষক তাহমিনা রহমানকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঘটনার সূচনা: ‘ডাবল অ্যাবসেন্ট’ হুমকি

তাহমিনা রহমান তার শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, স্ট্রাইকে অংশ নিলে ক্লাসে না আসার কারণে দুইদিনের অনুপস্থিতি (ডাবল অ্যাবসেন্ট) দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে কাউন্সেলিং চাওয়া চলবে না। কেউ যুক্তি দিতে এলে সেটাকে বাজে এক্সকিউজ ধরা হবে।

এ বক্তব্যের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়লে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ জনগণ একে গাজার মজলুমদের প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং দমনমূলক আচরণ হিসেবে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে।

ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি, তারপরও বহিষ্কার

ঘটনার চাপ অনুভব করে তাহমিনা রহমান মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, এবং গাজা ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি তার সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

তবে এ বিবৃতি জনমতকে শান্ত করতে পারেনি। ফলে ৭ এপ্রিল সকালে ড্যাফোডিলের মুখপাত্র অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু নিশ্চিত করেন যে, তাহমিনা রহমানকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে, এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান ও দায়

এ ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক প্রকার “Damage Control” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত অবস্থান যদি একটি গণতান্ত্রিক প্রতিবাদকে দমন করতে ব্যবহৃত হয়, সেটি কেবল শিক্ষাগত দায়বদ্ধতা নয়, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপও বটে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে অবস্থান নেয়ার স্বাধীনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের ক্ষমতার ভারসাম্য, এবং প্রশাসনের সাড়ার ধরন—সবই নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ ও বাংলাদেশের তরুণ সমাজ

এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নো ক্লাস, নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে। এ প্রজন্মের ছাত্রসমাজ মনে করে, আন্তর্জাতিক ন্যায়ের প্রশ্নে তারা নিরুত্তর থাকতে পারে না।

‘বিশ্ববিদ্যালয় কেবল বিদ্যা অর্জনের স্থান নয়, এটি ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ারও মঞ্চ’—এক শিক্ষার্থীর মন্তব্য এখন দেশজুড়ে আলোচনার অংশ হয়ে উঠেছে।

সবার দেশ/কেএম