মোট মৃত্যু ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে
গাজায় ইসরায়েলি তাণ্ডব চলছেই, একদিনে নিহত ৩৯

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হামলা অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিমান ও স্থল হামলায় কমপক্ষে ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
এতে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫১,২৫০-এ পৌঁছেছে, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনেরও বেশি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা মরদেহের কাছে উদ্ধারকারীরা এখনও পৌঁছাতে পারছেন না, যা মৃত্যুর সংখ্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ, নতুন হামলায় ১৮৫০ জনের বেশি নিহত
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক চাপে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে হামাসের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে নতুন করে হামলা শুরু করে। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ দফায় হামলায় ১,৮৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৪,৯০০ জন আহত হয়েছেন। এ হামলা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, যা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
মানবিক বিপর্যয়: বাস্তুচ্যুত ৮৫% জনগণ, ধ্বংস ৬০% অবকাঠামো
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৮৫ শতাংশের বেশি জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়ে খাদ্য, পানি, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের জন্য সংগ্রাম করছেন। প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে আত্মরক্ষার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা
২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এ পদক্ষেপ সত্ত্বেও হামলা অব্যাহত থাকায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজন
গাজার এ মানবিক সংকট কেবল স্থানীয় নয়, বিশ্বের বিবেকের পরীক্ষা। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং অব্যাহত হামলা শান্তির সম্ভাবনাকে আরও দূরে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ও নিষ্ঠাবান হস্তক্ষেপ ছাড়া গাজার এ বিভীষিকার অবসান সম্ভব নয়।
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ
সবার দেশ/কেএম