কাতার-মিসরের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব
ক্ষুধার্ত গাজা আহতদের রক্তদানেও অক্ষম
খান ইউনিসে বিমান হামলায় পুড়ে মরল ১১ জন #যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন প্রস্তাব কাতার-মিসরের

ইসরাইলের অবিরাম হামলায় গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। খাদ্য, পানি ও জ্বালানির অভাবে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে গাজাবাসী। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ, বেকারি বন্ধ, এবং বাজার ফাঁকা। এ অবস্থায় গাজার বাসিন্দারা শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তীব্র অপুষ্টির কারণে তাদের শরীরে রক্তের মাত্রা কমে গেছে, ফলে আহতদের জন্য রক্তদান করতেও অক্ষম তারা।
মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের অবরোধ ও অনাহার নীতির কারণে গাজায় রক্তদানে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর ইসরাইল খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও মানবিক সাহায্যের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ২ মার্চ, ২০২৫ থেকে পুনরায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করায় খাদ্য সংকট তীব্র হয়। এর ফলে রক্তদান কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে।
গাজা ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের ল্যাব বিশেষজ্ঞ হুদা আবু দালাল জানান, ২০-৩০% স্বেচ্ছাসেবক রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। স্বেচ্ছাসেবক আবদুল্লাহ আল-আরের ও ইয়াহিয়া আল-জারদ রক্তদানে ব্যর্থ হন, কারণ অপুষ্টির কারণে তাদের শরীর দুর্বল।
খান ইউনিসে হামলা:
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ, ২০২৫) ইসরাইলি বিমান হামলায় খান ইউনিসে একই পরিবারের ১১ জন জীবন্ত পুড়ে মারা যান। আগুন লেগে ধ্বংস হয় বাড়িটি। গাজা শহরের পশ্চিমাঞ্চলে আরেকটি হামলায় এক পরিবারের ৭ সদস্য নিহত হন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এদিন ৪০০ জনের বেশি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
কাতার-মিসরের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব:
কাতার ও মিসর মধ্যস্থতায় নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব তৈরি করেছে, যা ৫-৭ বছরের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে পারে। প্রস্তাবে হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেবে। ইসরাইলি সেনা গাজা থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ ও প্রধান আলোচক খালিল আল হাইয়া এ আলোচনায় অংশ নেবেন। তবে, ইসরাইল এখনো এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
ইসরাইলের অবরোধ ও হামলা গাজাকে মানবেতর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। খাদ্য সংকট ও অপুষ্টি শুধু জীবনহানি নয়, রক্তদানের মতো জরুরি সেবাকেও অকার্যকর করছে। কাতার-মিসরের প্রস্তাব যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি করলেও, ইসরাইলের অবস্থান এখনো অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবরোধ তুলে নেয়া ও মানবিক সাহায্য নিশ্চিত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা।
সবার দেশ/কেএম